১ মাসে বাগেরহাটে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩ হাজার

Bagerhat বাগেরহাটরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, বাগেরহাটঃ প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে বাগেরহাটে। পাতলা পায়খানা ও বমিজনিত কারণে এক মাসের শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষেরা চিকিৎসা সেবা নিতে সরকারি হাসপতালে ভিড় জমাচ্ছেন।

সরকারি হিসেব মতে, এক মাসে বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় দুই হাজার ৮৯৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় জেলার ৯টি উপজেলায় ৮২টি মেডিক্যাল টিম ও ১০টি কন্টোলরুম সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চল জুড়ে গত কয়েক দিন ধরে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অসহায় দরিদ্র, দিনমজুর আর নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। জীবিকারতাগিদে তাঁরা বৈশাখের এ খরতাপ উপেক্ষা করে হাড়ভাঙগা খাটুনিতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রচণ্ড গরমে নানা বয়সের মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের বড় একটি অংশই শিশু। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট চলছে। প্রচণ্ড গরম আর ব্যাকটেরিয়াযুক্ত পানির কারণে গত ১৫ এপ্রিল বাগেরহাট জেলা কারাগারে অর্ধশতাধিক বন্দি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে একজন নারীসহ ১৯ জন বন্দিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আক্রান্ত অন্য বন্দিদের সিভিল সার্জনের দু’টি মেডিক্যাল টিম কারাগারে গিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে।

এছাড়া বাগেরহাটের উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম দারুণ ভাবে ব্যবহত হচ্ছে।

বাগেরহাট সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গত ২৪ মার্চ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলায় দুই হাজার ৮৯৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে বাগেরহাট সদরে ৬৯১, কচুয়ায় ৪৩৪, রামপালে ৪৩৩, চিতলমারীতে ৩৮১, শরণখোলায় ২৬৫, ফকিরহাটে ২০৬, মোল্লাহাটে ২০৩ ও মংলায় ১৭৮ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। কন্টোলরুমের মাধ্যমে প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের তথ্য স্বাস্থ্য বিভাগে পাঠানো হচ্ছে।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. মো বাকির হোসেন জানান, প্রচণ্ড গরমের কারনে ডায়রিয়ার প্রকপ বাড়ছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ সরবারহ করা হচ্ছে। চিকিৎসক সংকট থাকায় জেলার কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দিয়ে এসব রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ডায়রিয়ার প্রকপ বৃদ্ধিপাওয়ায় জেলার ৯ উপজেলার ৮২টি মেডিক্যাল টিম সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিটি উপজেলায় কন্টোলরুম কাজ করছে। ২৪ ঘন্টাই ১০টি কন্টোলরুম খোলা রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিসের কন্টোলরুম উপজেলা পর্যায়ের কন্টোরুম থেকে ডায়রিয়া সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে।

ডায়রিয়ার প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বেশি করে বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্য সম্মত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. বাকির হোসেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ