আজ সোনিয়া, মোদি ও আদভানিদের অগ্নিপরীক্ষা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম দফায় আজ সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। অন্যান্য দফার তুলনায় এই দফার নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ, আজ ভোটের লড়াইয়ে থাকছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপির সভাপতি রাজনাথ সিং, এল কে আদভানির মতো মহাতারকা।
সাতটি প্রদেশ ও কেন্দ্রশাসিত দুটি অঞ্চলের ৮৯ আসনে এক হাজার ২৯৫ জন প্রার্থীর মধ্যে আজ প্রায় ১৪ কোটি ভোটার তাঁদের পছন্দের প্রার্থী বেছে নেবেন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে এই ৮৯ আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৩৭টি, বিজেপি ২১টি, তৃণমূল কংগ্রেস ও জনতা দল (সংযুক্ত) পাঁচটি করে এবং অন্য দুটি দল চারটি করে আসনে জয়ী হয়।
সপ্তম দফার নির্বাচন শেষে লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৪৩৮টি আসনের ভোট শেষ হচ্ছে। মে মাসে দুই দফায় আর ১০৫টি আসনে ভোট হবে।
গুজরাট রাজ্যে ২৬টি আসনের সব কটিতেই আজ ভোট হচ্ছে। এ ছাড়া তেলেঙ্গানার ১৭টি, পশ্চিমবঙ্গের নয়টি, উত্তর প্রদেশের ১৪টি, পাঞ্জাবের ১৩টি, বিহারের সাতটি, জম্মু-কাশ্মীরের একটি আসনে ভোট হবে। অন্যদিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দিউ ও দমনের একটি আসনে আজ ভোট গ্রহণ হবে।
আজ সোনিয়া লড়ছেন রায়বেরিলিতে। সেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন বিজেপির রাজেশ কুমার সিং ও এএপির সুনীল গৌতম। সোনিয়া ২০০৯ সালে সাড়ে তিন লাখ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। তিনি ২০০৪, ২০০৬ ও ২০০৯ সালেও এই আসন থেকে নির্বাচিত হন।
গুজরাটের ভাদোদরা আসনে আজ মোদির ভাগ্য পরীক্ষা হবে। এ আসনে কংগ্রেস থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মিস্ত্রি মধুসূদন দেবরাম। এ ছাড়া রয়েছেন আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রার্থী সুনীল দিগম্বর কুলকার্নি। তবে মোদি এই আসনে বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। ২০০৯ সালে গুজরাটের ২৬টি আসনের মধ্যে ১১টিতে জিতেছিল কংগ্রেস।
দলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী প্রবীণ নেতা এল কে আদভানি লড়ছেন রাজ্যের গান্ধীনগর আসন থেকে।
বিজেপির সভাপতি রাজনাথ সিং উত্তর প্রদেশের লক্ষৌ আসনে লড়ছেন। সেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের রীতা যোশী। অন্যদিকে বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) রয়েছেন নকুল দুবে। উত্তর প্রদেশে আজ মোট ১৪ আসনে ভোট হচ্ছে। রাজ্যের ঝাঁসি আসন থেকে লড়ছেন বিজেপির আরেক নেত্রী উমা ভারতী। এখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের প্রদীপ কুমার জৈন, সমাজবাদী পার্টির চন্দ্রপাল সিং যাদব। একই রাজ্যের কানপুর আসন থেকে লড়ছেন বিজেপির প্রভাবশালী নেতা মুরলি মনোহর যোশী।
অন্ধ্র প্রদেশের ১৭টি আসন এবং ১১৯ বিধানসভা আসনে একসঙ্গে ভোট হবে। সব আসনই তেলেঙ্গানা অঞ্চলে। ২০০৯ সালে এই রাজ্যে কংগ্রেস মোট ৪২ আসনের ৩৩টিই জিতেছিল। এবার তেলেঙ্গানা আর সীমান্ধ্র রাজ্য ভাগ নিয়ে বেশ ঘোলাটে অবস্থা এখানে। চন্দ্রশেখর রাওয়ের মতো কংগ্রেসের বাঘা বাঘা নেতা এবার নতুন দল করেছেন।
পাঞ্জাবের ১৩ আসনে আজ ভোট হলেও সবার দৃষ্টি থাকবে অমৃতসর আসনের দিকে। এখানে রয়েছেন বিজেপির প্রভাবশালী নেতা অরুণ জেটলি। তাঁর বিপক্ষে আছেন পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। এই রাজ্যে ২০০৯ সালে কংগ্রেস আটটি আসনে জিতেছিল।
বিহার রাজ্যে সাত আসনের মধ্যে সবার দৃষ্টি থাকবে মাধেপুরা আসনে। এই আসনে লড়ছেন জনতা দলের (সংযুক্ত) প্রেসিডেন্ট শারদ যাদব। বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ক্ষমতাসীন জেডির (ইউ) নীতিশ কুমারের জন্য এটি হবে সত্যিকারের পরীক্ষা।
এ ছাড়া কাশ্মীরের শ্রীনগরের আসনে আজ থাকছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ।
৭ এপ্রিল ভারতে নয় দফার লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণ শেষ হবে ১২ মে। এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ৮১ কোটি ৪০ লাখ। এবার মূল লড়াই হচ্ছে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে। লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিও। খবর-হিন্দুস্তান টাইমস ও এনডিটিভি।