বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মুদ্রায় ক্রয়ক্ষমতার সমতা সূচকের (পিপিপি ডলার) ভিত্তিতে সুলভ জীবনযাত্রার তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছয় নম্বরে। এ তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে মিসর এবং দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। মিয়ানমার, ইথিওপিয়া ও লাওসের পরেই রয়েছে বাংলাদেশের নাম। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বব্যাংকের সদর দফতর ওয়াশিংটন থেকে প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪০ ডলার ৩০ সেন্টে যে পরিমাণ পণ্য পাওয়া যায়, বিশ্ববাজারে এর দাম ১০০ ডলার। তবে মাথাপিছু আয় কম হওয়ায় বাংলাদেশর মানুষের ক্রয়ক্ষমতা খুব কম বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ক্রয়ক্ষমতার বিচারে ১৭৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪তম।
জীবনযাত্রার ব্যয়ে সস্তা দেশের মধ্যে বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ভারতের নাম। তবে ক্রয়ক্ষমতা সূচকে দেশটির অবস্থান ১২৭তম।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে ব্যয়বহুল দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের নাম। বিশ্ববাজারে ১০০ ডলারে যে পণ্য পাওয়া যায়, দেশটিতে এর দাম কম-বেশি ২১০ ডলার। এর পরই তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে নরওয়ে, বারমুডা, অস্ট্রেলিয়া ও ডেনমার্কের নাম। ব্যয়বহুল দেশের তালিকায় সপ্তম অবস্থানে রয়েছে জাপান। জাপান এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ। এর পরে রয়েছে ফিনল্যান্ড, লুঙ্মেবার্গ ও কানাডার নাম। তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ২৫তম। এর আগে রয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের নাম।
বিশ্বব্যাংকের এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিশ্বব্যাপী আয়-ব্যয়ে বৈষম্যের বিষয়টিও। এতে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বে মোট উৎপাদিত পণ্য ও সেবার দাম ৭০ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। পিপিপি ডলারে রূপান্তর করলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ লাখ ৬৫ হাজার ডলারে। এর প্রায় ৬৭ শতাংশ আসে বৃহৎ অর্থনীতির ১২টি দেশ থেকে। আর মধ্যম আয়ের সব দেশ মিলে আয় করে মাত্র ৩২ শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আয়-ব্যয়ে দরিদ্র দেশগুলোর অবস্থান খুবই নাজুক। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বিশ্বের ১১ শতাংশ মানুষ বাস করে। তবে এসব দেশের মোট আয় পৃথিবীর মোট উৎপাদনের মাত্র দেড় শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাথাপিছু আয় ১৩ হাজার ৪৬০ ডলার। মাত্র ২৮ শতাংশ মানুষের আয় এ গড় আয়ের চেয়ে বেশি। আর ৭২ শতাংশ মানুষের আয় বিশ্ব গড় আয়ের চেয়ে কম। তাছাড়া বেশিরভাগ মানুষের আয় ১০ হাজার ৫৭ ডলার। বাংলাদেশও এ শ্রেণীতেই পড়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তালিকা অনুযায়ী, মাথাপিছু আয়ের হিসাবে সবচেয়ে ধনী দেশ কাতার। এর পরেই রয়েছে ম্যাকাও, লুঙ্মেবার্গ, কুয়েত ও ব্রুনাই। কাতার ও ম্যাকাওয়ের মানুষের গড় আয় ১ লাখ ডলারের বেশি। ১১টি দেশের মানুষের গড় আয় ৫০ হাজার ডলারের উপরে। এসব দেশে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ লোক বাস করে।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে মধ্যম আয়ের কয়েকটি দেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। চীন, ভারত, রাশিয়া, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া এ কয়েকটি দেশের উৎপাদন বিশ্বের মোট আয়ের ৩২ দশমিক ২০ শতাংশ। এর মধ্যে চীন একাই পৃথিবীর মোট বিনিয়োগের ২৭ শতাংশের জোগান দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বিশ্বের ১৩ শতাংশ, ভারত ৭ শতাংশ, জাপান ৪ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের মোট বিনিয়োগের ৩ শতাংশ। চীন ও ভারত এশিয়ার মোট বিনিয়োগের ৮০ শতাংশ নির্বাহ করে।