সহায়তার অভিযোগ র্যাব-১১’র বিরুদ্ধে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, নারায়ণগঞ্জঃ নারায়নগঞ্জে অপহরণের পর প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে হত্যার ঘটনায় সহায়তা করার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে র্যাব-১১’র বিরুদ্ধে। নিহত নজরুলের পরিবার বলেছে, র্যাব-১১’র সহায়তায়ই নজরুলসহ পাঁচ জনকে তুলে নেওয়া হয়। র্যাবের সহায়তা ছাড়া এমন অপহরণ সম্ভব নয়। র্যাব-১১’র কার্যালয়েই অপহৃত সাত জনকে রাখা হয়েছিল বলেও ধারণা করছেন তারা।
নজরুল ইসলাম নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩নং ওয়র্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। গত রোববার একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোড থেকে তাকেসহ পাঁচ জনকে অপহরণ করা হয়। এর পর পরই নারায়নগঞ্জ আদলতের পাশ থেকে অপহরণ করা হয় আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ও তার ড্রাইভারকে। তিন দিন পর বুধবার ছয় জনের এবং বৃহস্পতিবার আরো এক জনের লাশ নারায়নগঞ্জের শীতালক্ষা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
শনিবার সকালে নারায়নগঞ্জের বাসায় কথা হয় নিহত নজরুলের শোকে ম্যুহমান স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও বড় ভাই নুরুল ইসলামের সঙ্গে। পিতৃহারা দুই সন্তান তরিকুল ও জাহিদুল এ সময় মায়ের পাশে ছিলেন। শোকার্ত বাড়িটিতে তখনো চলছিল স্বজনদের শোকের মাতম।
সেলিনা ইসলাম বলেন, ‘নারায়নগঞ্জ দেশের একটি গুরুত্বপূর্ন শহর। এখানের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির পরেও র্যাব-১১ ও পুলিশের কোন ভুমিকাই ছিল না। তারা সক্রিয় হলে আমার স্বামীসহ সাতজনকে এভাবে প্রান দিতে হত না।’
তিনি বলেন, ‘র্যাব-১১’র সহায়তায়ই আমার স্বামীসহ পাঁচ জনকে অপহরণ করা হয়। যারা অপহরণ করে, তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্ড দেখিয়ে নজরুলসহ পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায়। আমার স্বামীর প্রতিপক্ষকে সহায়তা করেছে র্যাব-১১।’ র্যাবের সহায়তা ছাড়া এমন অপহরণ সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেণ তিনি।
সেলিনা ইসলাম তার দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘আমার এই সন্তাদের যারা পিতৃহারা করছে, এতিম করেছে, আমাকে যারা স্বামী হারা করছে, তাদের বিচার চাই।’
চোখের পানি মুছতে মুছতে নিহত নজরুলের স্ত্রী ক্ষুব্দ কন্ঠে বলেন, ‘কার কাছে বিচার চাইবো? এই মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের গড ফাদার শামীম ওসমান। র্যাব-১১-পুলিশ তাদের কথায় চলতো। এদের কাছে বিচার পবো না। আল্লাহ আছেন। আমরা আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’
সেলিনা ইসলাম চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আল্লাহ ওদের বিচার করেণ। নারায়নগঞ্জের মানুষ ওদের বিচার দেখতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, র্যাব-১১’র কার্যালয়েই অপহৃত সাত জনকে একত্রে রাখা হয়েছিল। অপহৃতদের উদ্ধারে, অপহরণকারীদের গ্রেফতারে র্যাবের কোন তৎপরতাই ছিল না।’