যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোর-পুলিশ সংঘর্ষ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, যশোরঃ যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের ভেতরে কিশোর-পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশের দুই কনস্টেবলসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আসা এক অভিভাবককে মারপিটের জের ধরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের কিশোররা অভিযোগ করে জানায়, রোববার সকালে একজন অভিভাবক তার সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কিন্তু কেন্দ্র পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা দেখা করতে না দেওয়ায় ওই অভিভাবকের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা তাকে মারধর করে। বিষয়টি জানতে পেরে কিশোরদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও কয়েকটি কক্ষের গ্লাস ভাঙচুর করে।
এসময় পুলিশ কিশোরদের মারধর শুরু করলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে তিন জনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন, পুলিশ কনস্টেবল তুহিন (৩০) ও আলমগীর (২৮) এবং কিশোর নাজমুল (১৭)। বাকি আহতদের নাম জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক শাহবুদ্দিন জানান, সকালে একজন অভিভাবক দেখা করতে এলে তার আচরণে পুলিশ সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এনিয়ে কিশোরদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তারা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও মারপিট করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, সংঘর্ষের খবর পেয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা বিক্ষুব্ধ কিশোরদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
কিশোররা তাদের কাছে অভিযোগ করে, বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয়, কেন্দ্রে তাদের প্রশিক্ষণ, খেলাধুলা বা ওষুধের কোনো ব্যবস্থা নেই। উপরন্তু অভিভাবকদের দেখা করতে, আদালতের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে ঘুষ দিতে হয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ রয়েছে।