৭ খুনে টাকা লেনদেনে র‌্যাবের সংশ্লিষ্টতা তদন্তের নির্দেশ

High-Court-sm20130120092335সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নারায়ণগঞ্জে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ চাঞ্চল্যকর সাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র‌্যাবের সঙ্গে ছয় কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে র‌্যাবকে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রনোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে এ মামলার সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অপরণ ও হত্যার ঘটনায় র‌্যাবের সঙ্গে টাকা লেনদেনের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক। এছাড়া ডিবির পাশাপাশি সিআইডিকেও মামলার তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

সাত খুনে ছয় কোটির টাকার লেনদেন বিষয়ে জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. শামিম সরদার। আদালত বিষয়টি আমলে নেন।

আদালত অন্য এক আদেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আইনমন্ত্রণালয়ের দুই জন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই জন এবং জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ের দুই জনসহ মোট সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আগামী সাত দিনের মধ্যে ঘটনার সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে লিংক রোড ধরে ঢাকায় যাওয়ার পথে অপহরণ হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং তার চার সহযোগী। একই সময়ে একই সড়ক থেকে গাড়িচালকসহ অপহরণ হন আইনজীবী চন্দন সরকার।

তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল একে একে ছয়জনের এবং পরদিন ১ মে আরেকজনের লাশ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীতে।

এ অপহরণ ও হত্যার জন্য র‌্যাবকে দায়ী করেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম।

রোববার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেন অর্থ দিয়ে র‌্যাবের মাধ্যমে তার জামাতাকে হত্যা করিয়েছেন।’

নজরুল পরিবার প্রথমেই ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেনের দিকে অভিযোগ তুলেছিলেন। মামলায় প্রধান আসামিও করেছিলেন তাকে।

এর মধ্যে পালিয়ে যাওয়া নূর হোসেনের কার্যালয় ক্ষুব্ধ জনতা পুড়িয়ে দেওয়ার পর শনিবার তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি গাড়ি জব্দ এবং ১২ জনকে আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনার সঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. ইয়াসিনও জড়িত বলে দাবি করেন শহীদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘নূর হোসেন ও ইয়াসিন মিয়াসহ এজাহারভুক্ত আসামিদের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে র‌্যাব নজরুলসহ সাত জনকে খুন করেছে। ২৭ এপ্রিল নজরুলসহ সাতজনকে দুটি গাড়িতে তুলে নেওয়ার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত বালু শ্রমিকরা তাদের জানিয়েছে, র‌্যাব-১১ লেখা একটি গাড়ি সেখানে ছিল।’

এ ঘটনা আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে জানানো হলে তার পরামর্শে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়কের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বলে জানান শহীদুল।

তিনি বলেন, ‘সিও (কমান্ডিং অফিসার) আমাকে ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে নানা রকম জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন।’

এরপর র‌্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়কসহ জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে ফতুল্লা থানায় গেলে নারায়ণগঞ্জের এসপি ও ফতুল্লা থানার ওসি তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেননি বলে জানান শহীদুল ইসলাম।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ