অপহরণের অভিযোগে ছাত্রলীগের পাঁচ নেতা আটক
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে অপহরণের ১৩ ঘন্টা পর ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ ক্রীড়া সম্পাদক শ্রীজন ঘোষ সজীবসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সাত শিক্ষার্থীকে আটক করেছে রমনা থানা পুলিশ।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন: ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-ক্রীড়া সম্পাদক সৃজন ঘোষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সহসভাপতি তানভীরুল ইসলাম, জগন্নাথ হল কমিটির সহসভাপতি অনুপম চন্দ্র, মুহসীন হল কমিটির ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক মামুন, জসীমউদ্দীন হল কমিটির সাবেক সহসম্পাদক বাপ্পী ও ছাত্রলীগের কর্মী হিমেল। এদের সঙ্গে আরফান পাটোয়ারি নামে আরেক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে।
এদিকে আটক হওয়া নেতাদের ছাড়িয়ে নিতে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পুলিশের ওপর ব্যাপক চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান। আটক হওয়া ছাত্রলীগের নেতাদের শাহবাগ থানায় না রেখে রমনা থানার হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কারণ জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিল হোসেন বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ছাত্রলীগের ওই নেতাদের রমনা থানার পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এদের শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল থেকে আটক করা হয়েছে।
অপহৃত ব্যক্তির নাম ফরহাদ ইসলাম (২৫)। তিনি ফকিরাপুল ফরহাদ টেলিকম সেন্টারের মালিক। তার বাড়ি চাঁদপুরে। শুক্রবার দুপুরে তাকে জগন্নাথ হল থেকে উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকা থেকে ফরহাদ ইসলাম নামে এক ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ঢাবির জগন্নাথ হলে রাখা হয়। এরপর তার পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ফরহাদের পরিবারের সঙ্গে টাকা লেনদেনের সময় আরফান নামে একজন হাতে নাতে ধরা পড়েন। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফরহাদকে জগন্নাথ হলের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় ৬ ছাত্রকে আটক করে শাহবাগ থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট ড. অসীম কুমার সরকার বলেন, আমি বাইরে একটি প্রোগ্রামে ছিলাম। এ বিষয়ে কিছু জানতে পারিনি। হলের কেউ জড়িত আছে কিনা খোঁজ নিচ্ছি।
ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে আমি শুনেছি।
অপহৃত ব্যবসায়ী ফরহাদ বলেন, তাঁর এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে দেখা করতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চ এলাকায় যান। তখন আরফান ১৫-১৬ জনকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখানে রাতভর নির্যাতন করা হয়। এ সময় তিনি নির্যাতনের চিহ্ন হিসেবে শরীরে সিগারেটের পোড়া দাগ দেখান। ফরহাদকে অপহরণের এ ঘটনায় তাঁর বাবা তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে দুপুরে শাহবাগ থানায় একটি মামলা (নং-১৩) করেন।