গরমে সুস্থ থাকুন

hwt এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা : চলছে গ্রীষ্মকাল। বাহিরে কড়া রোদ ও প্রচণ্ড গরমে নিজেকে ফ্রেশ রাখতে থাকতে হবে সচেতন। একটু সতর্ক থাকলেই বছর শুরুর এই ঋতুতে সুস্থ থাকুন।

 

পান করুন পর্যাপ্ত পানি

এ সময় ঘাম হয় বেশি, শরীরের পানি ও খনিজ পদার্থ (লবণ) বেরিয়ে যায়। এতে দেহে পানি ও লবণের সমতা নষ্ট হয়। পানির এ ঘাটতি পূরণ করতে পান করুন পর্যাপ্ত পানীয়। দৈনিক আট গ্লাস বা তার চেয়ে বেশি পানি পান করা উচিৎ। তৃষ্ণা পেলেই পানি পান করা উচিত। তবে খেয়াল রাখতে হবে ফ্রিজের অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি নয়, তা গলা ব্যথার কারণ হতে পারে। গরমে লেবুর শরবত হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য এক চমৎকার পানীয়। শরবতে একটু লবণ ও চিনি মিশিয়ে নিন। চিনি শক্তি জোগাবে, আর লবণ পূরণ করবে আপনার শরীর থেকে ঘামের সাথে বেরিয়ে যাওয়া লবণের অভাবটুকু। লেবুতে থাকে ভিটামিন সি। এই গরমে ভিটামিন সি ফিরিয়ে দেবে আপনার লাবণ্যতা। মৌসুমী ফলও পানির চাহিদা মিটাবে। এক্ষেত্রে তরমুজ, শশা, পেঁপে, লিচু, আম, কলা, বেল, বাঙ্গি ইত্যাদি ফল খেতে পারেন।

 

যত কম প্রসাধন মাখুন

প্রসাধনে শরীরের লোমকূপ আটকে যায় বলে বাতাস ঢুকতে অসুবিধা হয়। তা ছাড়া শরীরের ঘামও বাতাসের সংস্পর্শে বেরিয়ে আসতে পারে না। কোনো কোনো প্রসাধনীতে তৈলাক্ত উপাদান থাকে বলে সেটা কারও ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেয়। একমাত্র সানস্ক্রিন ক্রিম ছাড়া আর কিছু না মাখাই শ্রেয়। তবে সানস্ক্রিন ক্রিম শুধু মুখে নয়, শরীরের উন্মুক্ত স্থানগুলোতেও মাখতে হবে। কড়া পারফিউম ব্যবহার করা যাবে না। হালকা করে পাউডারের প্রলেপ দিতে পারেন।

 

পোশাক

এসময়ের জন্য সুতির জামা পরা উচিত। এতে ঘাম বায়ু চলাচলের মাধ্যমে বাষ্পীভূত হওয়ার সুযোগ পায়। সিনথেটিক কাপড়ের জামা, টেরিলিনের জামা পরলে তাপ ক্ষয়ে বাধা পায়। হালকা রঙের জামা পরা ভালো, এতে মনে শীতল ভাব আসে। শিশুদের পোশাকের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। হালকা রঙের সুতি কাপড় নির্বাচন করতে হবে।

 

বেশি করে সালাদ খান

সালাদ ঠাণ্ডা রাখে শরীরটাকে। দুঃসহ গরমে বেশি করে সালাদ খান। চর্বিজাতীয় খাবার এসময়ে খাবেন না। বিভিন্ন ধরনের সবজি খাবেন। যেসব মহিলার শরীরে মেদ জমে আছে, এই গরমে তাদের ক্ষেত্রে মেদ কমানোর উপযুক্ত সময়। খাবারের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসুন এ সময়ে। কম খান।

 

ঘরটাকে ঠাণ্ডা রাখুন

লোডশেডিংয়ের ঝামেলায় দুঃসহ গরমে আপনার ঘর ঠাণ্ডা রাখার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। দরজা-জানালায় সাদা রঙের পর্দা টানান, যাতে বাইরে থেকে সূর্যের তীব্র আলো ঢুকতে না পারে। মেঝেতে ঠাণ্ডা পানি ঢালুন। পর্দাগুলোও ভিজিয়ে দিন পানি দিয়ে। আপনার ঘরের মাথার ছাদেও পানি ঢালার ব্যবস্থা করুন। ছাদের ওপরে ছাদজুড়ে শামিয়ানা টানিয়ে নিন।

 

ঘাম থেকে ঘামাচি

আমাদের ত্বকে আছে অজস্র ঘর্মগ্রন্থি। এগুলো থেকে ঘাম বের হয়। ঘামের সাথে ত্বকের ময়লা যুক্ত হয়ে এই গ্রন্থিগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ঘাম জমা হবে ভেতরে, আর গ্রন্থিগুলো ফুলে ওঠে ঘামাচি হবে। বেশি ঘামলে ঘামাচি হবার সম্ভাবনা বেশি। শিশুদের ঘর্মগ্রন্থিগুলো কম পরিপক্ক। ফলে তাদের ঘামাচি হবার সম্ভাবনা বড়দের চেয়ে বেশি। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে বা সাবান দিয়ে নিয়মিত ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে ঘামাচি হবে কম। পাতলা জামাকাপড় পরিধান করলে শরীর ঘামবে কম। তাতেও ঘামাচির আশঙ্কা কমবে।

 

গরমের ঠাণ্ডা লাগার ভয়

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা খুব বেশি কম হলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে। ঠাণ্ডা লাগতে পারে ঘামের শরীরে গোসল করলেও। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল আরামদায়ক। তবে গোসলের আগে শরীরের ঘাম শুকাতে দিন।

 

বিশ্রাম নিন পরিমিত

ঘামে ক্লান্ত দুর্বল শরীর সকল পরিশ্রম নাও সইতে পারে। ব্যায়াম বা পরিশ্রম করুন সহনীয় পর্যায়ে। সেটাও সকালে বা বিকেলে। দুপুরের কড়া রোদে নয়। বিশ্রাম নিন পরিমিত।

 

রোগজীবাণু বাড়ে দ্রুত

গরম আবহাওয়ায় খাবার রেখে দিলে তাতে রোগজীবাণু বংশবৃদ্ধি করে দ্রুত। সুতরাং রান্না করা খাবার খেতে হবে গরম গরম। পরে খেতে চাইলে তা রেখে দিতে হবে ফ্রিজে। অন্যথায় ফুড পয়জনিং হয়ে হতে পারে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ