র্যাব-১১’র সকলকে প্রত্যাহার শিগগিরই
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নারায়নগঞ্জের প্যানেল মেয়র ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা ও চরম অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় র্যাব-১১’র সকলকে শিগগিরই প্রত্যাহার করার হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায় সূত্রে জানা গেছে। এসব অভিযোগে গত ২৯ এপ্রিল র্যাব -১১’র সিওসহ তিন কর্মকর্তাকে র্যাব থেকে প্রত্যাহার করার পর তারা ৬ মে সেনা ও নৌবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন।
স্বরাষ্ট মন্ত্রণলয়ের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত তিন মাসে র্যাব-১১’র সকল কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। র্যাবের এবং ব্যাক্তি মোবাইল ফোনের কল লিষ্ট চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেখা হচ্ছে গত মাসের ভিটরস্ লিষ্ট। খতিয়ে দেখা হচ্ছে গাড়ির লক বুক। এসব যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, গত তিন মাসের র্যাব-১১’র কার্যক্রম যাচাই-বাছাইয়ের কাজ সুষ্ঠু ও নিরোপেক্ষ করতে র্যাব-১১’র নতুন সিও ছাড়া বাকি সক কর্মকর্তাদের শিগগিরই প্রত্যাহার করা হবে। ইতিমধ্যে এর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলেও সূত্রটি দাবি করে।
গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে র্যাাব-১১’র সব কর্মকর্তা প্রত্যাহার করা হবে।
র্যাব-১১’র জড়িত সব কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়ে সেলিনা ইসলাম বলেন, ‘র্যাবের-১১’র সিওসহ তিন কর্মকর্তা শুধু জড়িত তাতো নয়, র্যাব-১’র আরো অনেক কর্মকর্তা জড়িত। কারা লিংক রোড থেকে আমার স্বামিসহ ৭ জনকে তুলে এনেছিল, শুধু কি তিন জনেই ৭ জনকে তুৃলে এনেছিল? নিশ্চই ৭ জনের ডাবল ছিল। তারা কারা? তারা এখন কোথায়? তাদের সকলকে শাস্তি পেতে হবে।’
নিহতের নজরুল ইসলামের বড় ভাই নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘র্যাব-১১’র সাবেক সিও, মেজর আরিফ, লে. কমান্ডার রানা, নুর হোসেন, মায়িা চৌধুরীর পুত্র দিপু চৌধুরীসহ আরো অনেকে এই ঘটনায় জড়িত। তাদের সকলকে বিচারের মুখোমখি করতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নাসিক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও এাডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের শীতালক্ষা নদী থেকে নজরুল ও চন্দন সরকারসহ অপহৃত ৬ জনের এবং এর একদিন পর ১ মে বাকি ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
অপহরণে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় র্যাবের-১১ সিও (অধিনায়ক) লে.কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারনে নারায়নগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোজকান্তি বড়াল ও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ২৯ এপ্রিল প্রত্যাহার করা হয়। এর পর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ স্পষ্ট হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৬ মে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেনকে সেনাবাহিনী থেকে এবং নারায়নগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
নিহত নজরুল ইসলাম নাসিক প্যানেল মেয়র ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের কে›ন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। নিহত অন্যরা হচ্ছেন- অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার, তার গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠনের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন ও গাড়ি চালক ইব্রাহিম।