রহস্যজনক ভাঙচুর ধানমন্ডি মাঠে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজধানীর শেখ জামাল ধানমন্ডি মাঠে গতকাল শুক্রবার রাতে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তবে এই ভাঙচুর নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন মাঠের লোকেরা। ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা মামলা করা হয়নি।
ক্লাবের নিরাপত্তা বিভাগের সমন্বয়কারী মারাফত আলী এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে কিছু লোক মাঠে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং মাঠে নির্মাণাধীন কয়েকটি স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়। এ সময় মাঠের ভেতরে কেউ ছিল না।’
অবশ্য সেখানে নির্মাণকাজের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এক ব্যক্তি এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘ভাঙচুরের সময় মাঠে অন্তত ৫০ জন লোক ছিল।’ আরেকজন দাবি করেন, ‘ভাঙচুর করার সময় বোমা বিস্ফোরণ নয়, কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়।’
সরেজমিন দেখা যায়, মাঠের ফটকের বামদিকে শেখ জামালের ম্যুরালে কালো কালি লেপটে দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার ম্যুরালটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেন মাঠের লোকজন। মাঠের ভেতরে তিনটি বড় ডিজিটাল ব্যানার ও আটটি ছোট ব্যানার দেখা গেছে। ডিজিটাল বড় ব্যানারগুলোতে লেখা আছে, ‘অবৈধ সরকার এবং শেখ পরিবারের হাত থেকে ধানমন্ডি মাঠ রক্ষা ও জনসাধারণ-এর জন্য উন্মুক্ত করায় ইঞ্জি মোবাশ্বের, ইকবাল ভাই, ডানা আপা, সালমা আপাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। প্রচারে: পরিবেশবাদী।’
ছোট ব্যানারগুলোতে লেখা আছে, ‘স্থপতি মোবাশ্বের, ইকবাল হাবিব, ডানা ও সালমা আপা-এর বিরুদ্ধে অগণতান্ত্রিক সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর, করতে হবে। প্রচারে: পরিবেশবাদী।’
উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৮ নম্বরে গণপূর্ত বিভাগের মালিকানাধীন মাঠটি এক সময় সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। তবে ২০০৯ সালে ধানমন্ডি ক্লাবের নাম পরিবর্তন করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেড করার পর মাঠটি ঘিরে দেওয়া হয়। দুই বছর ধরে মাঠে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তবে পরিবেশবাদীদের আন্দোলন ও আদালতের নির্দেশনা অনুসারে গত ২৪ এপ্রিল মাঠটি সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়।
ধানমন্ডি খেলার মাঠ জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৮ এপ্রিল মাঠে ঢুকে সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। ফটক ভেঙে মাঠে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগে ওই দিনই মামলা করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। মামলায় স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইকবাল হাবিব ও সালমা এ সফি এবং বাংলাদেশ উইমেন্স স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করা হয়। অবশেষে আদালতের নির্দেশে মাঠ খুলে দেওয়া হলেও ভেতরের নির্মাণাধীন সব স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা।