ভোটার হালনাগাদ বিধিমালায় দুটি পরিবর্তন আসছে

Election Commission নির্বাচন কমিশনসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ বিধিমালায় দুটো পরিবর্তন আনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।এর মধ্যে একটি ভোটার হতে ইচ্ছুক ব্যক্তির শপথ বাক্যে আংশিক পরিবর্তন। অপরটি হলো ভোটার স্থানান্তর পরিবর্তনের সুবিধার্থে জাতীয় পরিচয়পত্র বিধিমালা ২০১২ এর ২৬ (৭) (৮) সংশোধন এনে ফরম নং ১৩ ও ১৪ কে এক করে ১৪নং ফরমে সংযোজন করা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও ভুয়া ভোটার বন্ধের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ বিধিমালায় ধারা ২ এর ৩৩ নম্বর বিধিতে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এনে যুক্ত করা হচ্ছে ভোটারের স্বাক্ষর ও টিপসই সহ শপথ।শপথ নামায় লেখা হবে যে, আমি শপথ করে বলছি যে, আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং অত্র ফরমে বর্ণিত তথ্যাদি আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সম্পূর্ণ সত্য। আমি অন্য কোনো ভোটার এলাকার ভোটার তালিকায় আমার নাম অন্তর্ভূক্তির জন্য নিবন্ধন ফরম পূরণ করিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বে ভোটার তালিকা হালনাগাদ বিধিমালার ধারা ২ এর (৩৩) আবেদনকারীর শপথবাক্যে লেখা ছিল, ‘আমি শপথ করে বলছি যে, আমি বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক। উপরে বর্ণিত সকল তথ্য সত্য।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘আমরা ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে কিছু পরিবর্তন এনেছি। কিছু তথ্য বা বিধি আছে যা তেমন একটা জরুরি নয়। বিষয়টি সহজ করার জন্য কয়েকটি ধারায় সংযোজন-বিয়োজন করছি।’ মূল বিষয় হচ্ছে ভোটারদের সুবিধার্থে ভোটার হালনাগাদ আইনে যে কোনো পরিবর্তন আনবে ইসি।

ইসির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, বিধিমালার এ সংশোধন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। এর ফলে কোনো ভোটার মিথ্যা তথ্য দিলে বা ভোটার হওয়া স্বত্বেও নতুন করে ভোটার হলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা সহজ হবে। অপরদিকে দ্বৈত ভোটার হওয়া দণ্ডনীয় বলে যারা বিষয়টি জানেন, তারা নিবন্ধন ফরম পূরণ করার সময় বিষয়টি যেনে যাবেন। ফলে অজ্ঞতার কারণে দ্বৈত ভোটার হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

অপরদিকে, জাতীয় পরিচয়পত্র বিধিমালা ২০১২ এর ২৬ (৭) (৮) সংশোধন হচ্ছে। ধারাগুলোতে ফরম নং ১৩ ও ১৪ কে এক করে ১৪নং ফরমে সংযোজন করা হচ্ছে।
অর্থাৎ এ আইনের সংশোধনীর ফলে এখন থেকে ভোটাররা শুধু ১৪ নং ফরমে আবেদন করে  ভোটার এলাকা পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছেন। আবেদনের পর বিষয়টি নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানিতে স্থানান্তরের কারণ নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের পরেই কেবল ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যাবে বলে বিধান রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে যে কোনো ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চাইলে সে যদি একই উপজেলার মধ্যে হয় তাহলে ফরম ১৩ পূরণ করতে হতো। আর যদি উপজেলা ভিন্ন হতো তাহলে ফরম ১৪ পূরণ করতে হতো।

আগামী ১৫ মে থেকে সারাদেশে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করবে নির্বাচন কমিশন। ৩ ধাপে এ কাজ পরিচালনার পর তা শেষ হবে নভেম্বরে। প্রথম ধাপে ১৮ লাখ নাগরিককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছেন ইসির। এবার নতুন ভোটার হবে প্রায় ৪৬ লাখ।

তবে এখন পর্যন্ত হালনাগাদের জন্য নিবন্ধন ফরম ছাপানোর কাজ শুরু করেনি নির্বাচন কমিশন। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহকারী এবং সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণও শেষ হয়নি। সেজন্য হালনাগাদের কাজ শুরু করা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এবার সময় কম হলেও পরিকল্পনা করে কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। যদি থানা পর্যায়ের কর্মকর্তারা কোনো গাফিলতি না করেন তবে ঠিক সময়েই কাজ শুরু এবং শেষ করা যাবে। কেননা, এবার ফরম ছাপানো হবে মিলিটারি প্রিন্টিং প্রেসে। অত্যাধুনিক মেশিনে ১৮ লাখ নিবন্ধন ফরম ছাপাতে ১ দিন সময় লাগবে। আর ট্রেনিং এর কাজও প্রায় শেষ। তাই বিলম্ব হওয়ার কোনো কারণ নেই।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ