গ্রেফতারে দেরি হলেও আদালত অবমাননা হবে না
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন র্যা ব সদস্যকে গ্রেফতারে দেরি হলেও আদালত অবমাননা হবে না বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মত প্রকাশ করেন। অবিলম্বে গ্রেফতারের আদেশ থাকা সত্ত্বেও ওই তিন র্যা ব কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করতে দেরি হওয়ায় আদালত অবমাননা হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন হবে? হাইকোর্টতো কোনো সময় বেঁধে দেননি। এ ধরনের আদেশের পর গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আদর্শ সময় দৈর্ঘ কত হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমি জানি না। আদালত বলতে পারে। আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে চাইলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ কী হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমি বলবো না। আমি তাদের আইনজীবী না। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে কোনো আবেদন করবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমি এখন বলতে পারবো না। সংবাদ ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ঘটনার পর তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত এক রুলে বেশ কিছু অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছিল। ওই আদেশ থেকে আমরা ৬টি প্রতিবেদন পেয়েছি। তিনি বলেন, সিআইডি, র্যা ব, আইজিপি, স্বরাষ্ট্র সচিব, জনপ্রশাসন সচিব এবং হাইকোর্টের আদেশে গঠিত কমিটির পক্ষ থেকে এ সব রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে কাজ চলছে বলে এসব প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে গত ২৭ এপ্রিল অপহরণ করা হয়েছিল, তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। এরপর র্যাষব-১১ এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ তোলেন নারায়ণগঞ্জের ঘটনার তদন্তে ৫ মে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশে এই কমিটি গঠন করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লাকে চেয়ারম্যান করে সাত সদস্যের এই কমিটি হয়। এই কমিটি গণতদন্তের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে প্রশাসনের কোনো সদস্য বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা উদঘাটন করবে। অপহৃত ব্যক্তিদের জীবিত উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো অবহেলা বা ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখতে বলেছে আদালত। কমিটি গঠনের পর ১১ মে হাইকোর্ট আরেক আদেশে তিন র্যা ব কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে জানালেও ৭২ ঘণ্টায়ও তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। ওই তিনজন হলেন সেনা কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর কর্মকর্তা এম এম রানা। অপহরণের পর তাদের নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে আনা হয়, পরে তাদের অবসরে পাঠানো হয়।