র্যাব হুমকি দিচ্ছে অভিযোগ নজরুলের শ্বশুরের
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ র্যাবের বিরুদ্ধে হুমকি দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম, যিনি এই হত্যাকাণ্ডে এই বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রথম আনেন।
বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউসে গণশুনানিতে সাক্ষ্য দিয়ে বেরিয়ে শহীদুল সাংবাদিকদের বলেন, “র্যাবের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকে হুমকি দিয়েছে। তাই জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।”
শহীদুলের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট আনোয়ার লতিফ খান এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
“তবে র্যাবের নামেও কেউ যদি এই ধরনের হুমকি দিয়ে থাকে,তা আমরা তদন্ত করে দেখব।”
গত ২৭ এপ্রিল অপহৃত নজরুলসহ সাতজনের লাশ তিন দিন পর উদ্ধারের পর শহীদুল দাবি করেন, কাউন্সিলর নূর হোসেন ৬ কোটি টাকা দিয়ে র্যাবের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান জানানোর পর শহীদ আবার অভিযোগ করেন, র্যাবের সহায়তায় পালিয়েছেন এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি।
নজরুলের শ্বশুরের ওই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় র্যাবের মুখপাত্র হাবিবর রহমান বলেছিলেন, তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে শহীদুল এই ধরনের কথা বলছেন।
র্যাব তার বাহিনীর তিন কর্মকর্তা এবং নূর হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে শহীদুলের অভিযোগ।
শহীদুল প্রথম অভিযোগ তোলার পর র্যাব বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে হাজির হয়ে বাহিনীর মহাপরিচালক বলেছেন, তারা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন না।
প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী খুনিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেয়ায় তাদের ওপর ভরসা রাখছেন শহীদুল। তবে দুই-এক দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার না হলে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন সাবেক এই ইউপি চেয়ারম্যান।
এই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর র্যাব-১১ এর অধিনায়কসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে আনার পর সামরিক বাহিনী থেকে তাদের অবসরে পাঠানো হয়। তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ রয়েছে হাই কোর্টের।
এই হত্যাকাণ্ড তদন্তে হাই কোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির দ্বিতীয় দিনের গণশুনানিতে সাক্ষ্য দিতে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজে উপস্থিত হন সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম মিজমিজি এলাকার বাসিন্দা শহীদুল।
শুনানিতে কী বললেন- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কী বলেছি, তা তদন্তের স্বার্থে বলা যাচ্ছে না। পত্রপত্রিকায় যা দেখছেন, তাই বলেছি।”
সাতজনকে অপহরণ করা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ শহরে ফতুল্লা থানার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে। তবে অপহৃত নজরুল এবং মামলার আসামিরা সবাই সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা।
শহীদুল তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, এই গণশুনানি সিদ্ধিরগঞ্জে হলে অনেকে সাক্ষ্য দিতে আসত।
“সেখানে হাজার হাজার নারী পুরুষ অংশ নিত এবং নুর হোসেন ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিত। নূর হোসেনের ভয়ে এখানে কেউ এসে সাক্ষ্য দিচ্ছে না।”
গণশুনানিতে প্রথম দিনে ছয়জন সাক্ষ্য দেন। সেদিনও নজরুলের ভাই আবদুস সালাম বলেছিলেন, নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় অনেকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মুখ খুলতে তদন্ত কমিটির সামনে আসছে না।