পাসের হার ও জিপি-৫ প্রাপ্তিতে রেকর্ড

nurul islam nahid শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সারাদেশে একযোগে আটটি সাধারণ বোর্ডের এসএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে শনিবার। এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

এ বছর ১০ বোর্ডে গড় পাসের হার ৯১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৮৯ দশমিক ০৩ শতাংশ। এবার পাসের হার দুই দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার ২৭৬ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার ২২৬ জন।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শনিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০১৪ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। এর আগে সকাল ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী বোর্ড চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ৬০ দিনের মধ্যে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফল প্রকাশ আমাদের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এবার পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৫৮ দিনে ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩ লাখ তিন হাজার ৩৩১ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছয় লাখ ৭১ হাজার ৯৬১ জন ছাত্র ও ছয় লাখ ৩১ হাজার ৩৭০ জন ছাত্রী।

তিনি আরো বলেন, ৮টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এসএসসিতে পাসের হার ৯২ দশমিক ৬৭, মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ২৫ ও কারিগরি বোর্ডে ৮১ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছর আট বোর্ডে পাসের হার ছিলো ৮৯ দশমিক ৭২, মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ১৩ ও কারিগরি বোর্ডে ৮১ দশমিক ১৩ শতাংশ ছিল।

নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর শতকরা হার, শতকরা পাশের হার, মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও প্রতিষ্ঠানের গড় জিপিএ মূল্যায়নের ভিত্তিতে প্রতিটি বোর্ডে সেরা ২০ প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে। একই মানদণ্ডের ভিত্তিতে জেলাভিত্তিকও সেরা ১০টি করে প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে।

এবার ঢাকা বোর্ডে সেরা হয়েছে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে গত বছরের সেরা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ভিকারুননিসা নুন স্কুল।

মাদ্রাসা বোর্ডে সেরা হয়েছে ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসা। কারিগরি বোর্ডের সেরা খুলনার ইউসেপ মহসিন টেকনিক্যাল স্কুল।

সংবাদ সম্মেলনের পর শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ছাড়াও www.educationboardresults.gov.bd ঠিকানায় ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে ফলাফল জানা যাবে।

মোবাইল থেকে ফলাফল জানতে মেসেজ অপশনে গিয়ে স্পেস দিয়ে দিয়ে পরীক্ষার নাম (ssc/alim/tec), ইংরেজিতে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর, রোল নম্বর, পাসের সন ২০১৪ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজে ফলাফল জানানো হবে।

দেশের ৮টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এসএসসিতে এবার অংশ নিয়েছে ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৮৭০ জন ছাত্রছাত্রী। পাস করেছে ১০ লাখ আট হাজার ১৭৪ জন। মাদ্রাসা বোর্ডে দুই লাখ ৩৬ হাজার ৬৩০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে দুই লাখ ১১ হাজার ২০৩ জন। কারিগরি বোর্ডে এক লাখ দুই হাজার জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৮৩ হাজার ৯৫৪ জন।

এবার এসএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা গত ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২০ মার্চ শেষ হয়। ২৭ মার্চ পর্যন্ত চলে ব্যবহারিক পরীক্ষা। এবার বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং গণিত ছাড়া বাকী ২১টি বিষয়ের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে নেওয়া হয়েছে।

আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ২২ হাজার ৩১৩ জন। মাদ্রাসা বোর্ডে ১৪ হাজার ১৩ ও কারিগরি বোর্ডে পাঁচ হাজার ৯৫০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

১৮ থেকে ২৪ মে উত্তরপত্র পুনঃনীরিক্ষণের আবেদন

এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনীরিক্ষণের জন্য আগামী ১৮ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল দিয়ে ফল যাচাই করার আবেদন করা যাবে। আবেদন করতে মোবাইলে ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে আরএসসি (RSC) লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে ফি প্রযোজ্য হবে। ফিরতি এসএমএস এ আবেদন ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর দেওয়া হবে। আবেদনে সম্মত থাকলে ম্যাসেজে গিয়ে আরএসসি (RSC) লিখে স্পেস দিয়ে ইয়েস লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে নিজ মোবাইল ফোন নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।

যেসব বিষয়ে দুটি পত্র (বাংলা ও ইংরেজি) রয়েছে সেসব বিষয়ে একটি বিষয় কোড (বাংলার জন্য ১০১, ইংরেজির জন্য ১০৭) এর বিপরীতে দুটি পত্রের জন্য আবেদন হিসেবে গণ্য হবে এবং আবেদন ফি হিসেবে ২৫০ টাকা লাগবে। একই এসএমএসের মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের জন্য আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে কমা দিয়ে লিখতে হবে।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ