তারেক ও আরিফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, নারায়ণগঞ্জঃ নারায়নগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে র্যাব-১১’র সাবেক কর্মকর্তা (সেনাবাহিনী থেকে চাকরি হারোনো) তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ ও আরিফ হোসেনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। দুপুরে নারায়নগঞ্জের জেলা জজ আদালতে তাদের হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আজ (শুক্রবার) ভোর রাতে তাদের ঢাকা ক্যান্টমেন্ট থেকে গ্রেফতার করা হয়। গেফতারের পর তাদের নারায়নগঞ্জ জেলার পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছি। রাতে তাদের গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদ করা হয়েছিল। ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এখন আমরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবো।’
এর আগে শুক্রবার সকালে গ্রেফতারের বিষয়ে ‘সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অনাপত্তি পত্র পাওয়ার পর পুলিশের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরি হারানো লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নৌ-বাহিনীর সাবেক লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে গ্রেফতারের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়। এদের মধ্যে রাতে তারেক ও আরিফকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এম.এম রানাকে পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত কর্মকর্তা সুত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। অপহরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে র্যাব-১১’র সিও (অধিনায়ক) লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারনে নারায়নগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল ও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ২৯ এপ্রিল প্রত্যাহার করা হয়।
নারায়নগঞ্জের শীতালক্ষা নদীতে ৩০ এপ্রিল অপহৃত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের এবং ১ মে বাকি এক জনের লাশ ভেসে ওঠে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনায় র্যাব-১১’র বিরুদ্ধে অপহৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে বলা হয়- ‘র্যাব-১১’র সিও তারেক সাঈদসহ আরো কয়েকজনে মিলে নুর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে এই ৭ জনকে হত্যা করেছে।’
অপহরণ করে হত্যার এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ স্পষ্ট হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৬ মে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেনকে সেনাবাহিনী থেকে এবং নারায়নগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১১ মে হাইকোর্ট তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। চাকরি হারানো এই তিন জনই এখন অবসরকালীন ছুটিতে রয়েছেন।
নিহত নজরুল ইসলাম নাসিক প্যানেল মেয়র ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের কে›ন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। নিহত অন্যরা হচ্ছেন- অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার, তার গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠনের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন ও গাড়ি চালক ইব্রাহিম।