রানা পলাতক, রাতেই গ্রেফতারে অভিযান
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নারায়নগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নৌ-বাহিনী থেকে চাকরি হারোনো র্যাব-১১’র নারায়নগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান এম.এম রানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্তকারী কর্মকর্তার ধারনা করছেন, ৬ মে নৌ-বাহিনী থেকে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর পর তিনি নৌ-বাহিনীর আবাসিক এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি তারা ‘সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ’কে জানাবেন। একই সঙ্গে রানাকে গ্রেফতারে আজ রাত থেকেই অভিযান শুরু করা হবে বলে তদন্ত সূত্রে জানা গেছে।
গত ১১ মে হাইকোর্ট নারায়নগঞ্জে ৭ হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এম. এম রানাসহ র্যাব-১১’র সাবেক সিও লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ ও মেজর আরিফ হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পুলিশ হাইকোর্টের এই গ্রেফতারের বিষয়ে ‘সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অনাপত্তি পেয়ে শুক্রবার গভীর রাতে ক্যান্টনমেন্টে অভিযান চালিয়ে তারেক সাঈদ ও আরিফ হোসেনকে গ্রেফতার করে।
তদন্ত কর্মকর্তা সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার একই সময়ে বনানীস্থ নৌ-বাহিনীর আবাশিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে লে. কমান্ডার (বাধ্যতামূলক অবসর) রানাকে পাওয়া যায়নি। নৌ-বাহিনীর নজরদারী থাকা অবস্থায় সে কিভাবে পালিয়ে গেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। অপহরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে র্যাব-১১’র সিও (অধিনায়ক) লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারনে নারায়নগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল ও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ২৯ এপ্রিল প্রত্যাহার করা হয়।
নারায়নগঞ্জের শীতালক্ষা নদীতে ৩০ এপ্রিল অপহৃত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের এবং ১ মে বাকি এক জনের লাশ ভেসে ওঠে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনায় র্যাব-১১’র বিরুদ্ধে অপহৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে বলা হয়- ‘র্যাব-১১’র সিও তারেক সাঈদসহ আরো কয়েকজনে মিলে নুর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে এই ৭ জনকে হত্যা করেছে।’
অপহরণ করে হত্যার এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ স্পষ্ট হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৬ মে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেনকে সেনাবাহিনী থেকে এবং নারায়নগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১১ মে হাইকোর্ট তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। চাকরি হারানো এই তিন জনই এখন অবসরকালীন ছুটিতে রয়েছেন।
নিহত নজরুল ইসলাম নাসিক প্যানেল মেয়র ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের কে›ন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। নিহত অন্যরা হচ্ছেন- অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার, তার গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠনের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন ও গাড়ি চালক ইব্রাহিম।