আল্লাহর দেয়া কাজ পালন করে যেতে চাই
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি মানুষকেই মহান আল্লাহ কিছু কাজ দিয়ে পাঠান। আমাকেও তিনি যে কাজটি দিয়েছেন- তা আমি পালন করে যেতে চাই। আর সাহসের সঙ্গে তা করে গেলে আল্লাহই আমাকে রক্ষা করবেন। তিনি বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিলো দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, আমারও একই স্বপ্ন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি মহান আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথানত করব না। বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করেই চলব। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৩৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের হলরুমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নাম নিশানা মুছে দিতে চেয়েছিলেন প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। দেশের মাটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন ও চেতনাকেও নষ্ট করে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তার আশ্রয় প্রশ্রয়েই দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থান ঘটেছে। তিনি বলেন, তেমনি এক রাজনৈতিক ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ প্রতিকূল অবস্থা এবং ঘোর ঝড়বৃষ্টির মধ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে দেশে ফিরে আসি। সেদিন একমাত্র সাহস আর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উৎসাহ ছাড়া আর কোনো সম্বলই ছিলো না। তিনি বলেন, যেদিন দেশে ফিরি সেদিন লাখো মানুষের ঢল ছিলো, তাদের ভালোবাসা ছিলো। কিন্তু ছিলো না সেই ভালোবাসার মানুষগুলো যাদের ভালোবাসাই সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত। তিনি বলেন, সবাইকে রেখে দেশ ছেড়েছিলাম কিন্তু ফিরে এসে দেখি কেউ নেই। বনানী কবরস্থানে সারি সারি কবর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা, এর চেয়ে আর কোনো পরিচয় আমার প্রয়োজন নেই। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, কিন্তু কখনো আওয়ামী লীগের মতো এত বড় একটি দলের দায়িত্ব নিতে হবে তা ভাবিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় একটা বিষয়েই জোর দিয়েছি, আমার জন্য দেশের ও দলের যেনো কোনও ক্ষতি না হয়। আমার কারণে যেনো দলের নেতা-কর্মীদের হেয় হতে না হয়। মা ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাবা যখন জেলে থাকতেন তখন মাকেই দেখেছি দল সামলাতে। তার কাছ থেকেই আমরা শিক্ষা নিয়েছি। শেখ হাসিনা এসময় তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আওয়ামী লীগের সেসব নেতা-কর্মী ভূমিকা রেখেছিলেন, লন্ডনে দলের পক্ষে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পক্ষে জনমত গঠনে যারা পাশে ছিলেন তাদের কথা স্মরণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর বিদেশে তাকে ও ছোট বোন রেহানাকে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র লন্ডনেও সক্রিয় ছিলো তাদের নানা ধরনের তৎপরতার মধ্যে টিকে থাকাই ছিলো কষ্টকর। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পরিচালনায় এ আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।