বিএনপির ৪ দফা দাবি
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ অশান্তি, আতঙ্ক আর নৈরাজ্যের অমানিশা কাটাতে এই মুহূর্তে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবী জানিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি ক্রসফায়ার আর বন্দুকযুদ্ধের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করা, নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনসহ দেশব্যাপী অপহরণ, গুম, খুন ও গুপ্তহত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনা এবং সারাদেশের আতংক র্যা বকে বিলুপ্ত করারও দাবী জানিয়েছে বিএনপি। এই চার দফা দাবি জানিয়ে দলের পক্ষে রোববার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন রিজভী। এই অবৈধ সরকার এখন গলাচিপা সরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘র্যা ব হত্যা গুম ও অপহরণের মূর্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছে। তাই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের এক নতুন ফ্রাংকেনস্টাইনের দানবের নাম র্যা ব।’ রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘গণমাধ্যমে নীরব নিষেধাজ্ঞা চলছে। টিভির টকশো’র ব্যাপারে বিধি-নিষেধ, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন নেতারা গণমাধ্যমে অযৌক্তিক, অশালীন উক্তি দিচ্ছে। বিরোধী দলের সমাবেশে সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া, ইন্টারনেট, ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। চোখ রাঙ্গানীর মাধ্যমে গণতন্ত্রের যে মৌলনীতি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তা খর্ব করা হয়েছে। এভাবেই সরকারি পেষণযন্ত্র জনগণের টুঁটি চেপে ধরেছে।’ তিনি বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) ডেমরা এলাকায় অপহরণ, গুম, খুন এর প্রতিবাদে বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা করতে দেওয়া হয়নি। এ কারণে ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের আক্রমণ, বাসায় বাসায় হানা এবং মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিনের ডেমরাস্থ বাসভবন শনিবার দুপুরে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘আজ সকাল সাড়ে ১০টায় যুবদল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর এর উত্তরার বাসভবনে তাকে না পেয়ে পুলিশ বাসার আসবাবপত্র ভাংচুর এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন এর যাত্রাবাড়ীস্থ কাজলার গ্রামের বাড়ীতে গতকাল বেলা ১২ টায় পুলিশ হানা দেয়। আবুল হোসেনকে না পেয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর এবং বাসার লোকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। গেন্ডারিয়া থানায় বিএনপি’র মনির হোসেনসহ দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। শাহ আলী থানার মিছিলে পুলিশ হামলা করে সাত জনের অধিক নেতা-কর্মীকে আহত করে। কলাবাগান থানার মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে ৬/৭ জনকে আহত করে।’ সরকারি অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ-যুবলীগ যেন এ যুগের ‘কাপালিক’ দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এলোপাতাড়ি মারধর, চাপাতি দিয়ে হত্যা, রক্তাক্ত জখম, অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়া, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, হল দখল, সিট বাণিজ্য, ভর্ত্তি বাণিজ্য, মুক্তিপণ আদায় এবং পরীক্ষা কেন্দ্র দখলে ছাত্রলীগের কর্মীরা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।’ রিজভী বলেন, ‘কাউকে নির্বাচিত করার অধিকারের পাশাপাশি কাউকে পরাজিত করার অধিকারও জনগণের রয়েছে। জনগণের সেই অধিকার এখন আওয়ামী লীগ ডাকাতি করে কেড়ে নিয়েছে। ’ রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় মদত না থাকলে শুধু নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনই নয়, দেশব্যাপী বেআইনী গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যার এই মহাযজ্ঞ চলতো না। প্রশাসন না চাইলে গডফাদাররা এক মুহূর্তের জন্যই টিকতো না। নুর হোসেনের টাকার লোভে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকেরা হাড়হিম করা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে।’