রানার ৭ দিনের রিমান্ড
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক র্যাব কর্মকর্তা এম এম রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতে নেয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
রোববার বিকালে চাকুরিচ্যুত এই নৌ-বাহিনীর কর্মকর্তাকে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে হাজির করে ১০ দিনে রিমান্ড চান সাত খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ ডিবির ওসি মামুনুর রশীদ মণ্ডল।
আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিকাল পৌনে ৫টার দিকে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মধ্যে রানাকে জনাকীর্ণ আদালত প্রাঙ্গণে আনা হয়।
সাত খুনের ঘটনায় এর আগে গ্রেপ্তার র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের অপর দুই কর্মকর্তা অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও আরিফ হোসেনকে আগের দিন পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
হাই কোর্টের আদেশের ছয়দিন পর শুক্রবার গভীর রাতে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক ও মেজর আরিফ হোসেনকে ঢাকা সেনানিবাস এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন রাত দেড়টার দিকে একই এলাকা থেকে রানাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৭ এপ্রিল কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন একসঙ্গে অপহৃত হলে তা নিয়ে সারাদেশে আলোচনা ওঠে।
তিন দিন বাদে শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়ার পর নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ তোলেন, কাউন্সিলর নূর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে র্যাব এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
নিহত কাউন্সিলর নজরুলের স্বজনরা বলে আসছেন, র্যাবের এই কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই এই হত্যাকাণ্ডের সব রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।
এরপর হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি আরেকটি বেঞ্চ গত ১১ মে র্যাবের এই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
এর আগেই র্যাব-১১ থেকে তারেক, আরিফ হোসেন ও রানাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে সামরিক বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়। সেনাবাহিনী তারেক ও আরিফকে অকালীন অবসরে পাঠায়। আর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রানাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় নৌবাহিনী।
নারায়ণগঞ্জের এই হত্যাকাণ্ডের পর এই পর্যন্ত ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ, তবে তার মধ্যে মামলার ছয় আসামির কেউ নেই।
এর মধ্যে মামলার তিন নম্বর আসামি হাসমত আলী হাসুকে যশোরে গ্রেপ্তারের খবর প্রথমে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানালেও পরে অস্বীকার করেন।
আটক ২২ জনের মধ্যে সাতজনকে হত্যামামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। বাকিদের ৫৪ ধারায় (সন্দেহভাজন) গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগ হলেন র্যাবের সাবেক দুই কর্মকর্তা।