প্রথম আলোর সামনে প্রতিবাদ, কপিতে আগুন
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে এসে প্রথম আলো বন্ধ এবং এর সম্পাদক মতিউর রহমানের গ্রেপ্তার দাবি করেছে ‘সিপি গ্যাং’ নামে একটি অনলাইনভিত্তিক সংগঠন।
আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে সিপি গ্যাংয়ের অল্প কিছু সদস্য বিক্ষোভ করে এই দাবি জানান। এ সময় তাঁরা প্রথম আলোর কয়েকটি কপিতে আগুন দেন।
বিক্ষোভকালে সিপি গ্যাংয়ের সদস্যরা ‘প্রথম আলোর আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘প্রথম আলো বন্ধ করো, মতিকে আটক করো’, ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও করো, প্রথম আলো ঘেরাও করো’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়। ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির কোনো ক্ষমা নেই, সাম্প্রদায়িক উসকানিদাতা প্রথম আলোর বন্ধ চাই, বাংলাদেশের স্বার্থে প্রথম আলো বর্জন করুন, মতিউর রহমানের শাস্তি চাই’ এই ব্যানার নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁদের হাতে ‘লাখো শহীদ দিচ্ছে ডাক, প্রথম আলো নিপাত যাক, ‘জ্বালো রে জ্বালো, প্রথম আলো জ্বালো, ‘প্রথম আলোর আস্তানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও,‘প্রথম আলো বন্ধ করো, মতিকে আটক করো’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড ছিল।
সিপি গ্যাংয়ের সদস্যরা বিক্ষোভ থেকে প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল এবং প্রকাশনা বন্ধের দাবি জানান। সংগঠনের আহ্বায়ক রাসেল রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবিলম্বে প্রথম আলোর লাইসেন্স বাতিল ও প্রকাশনা বন্ধ করতে হবে এবং এর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ প্রতিবেদনটি প্রকাশের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
সিপি গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রায় আধা ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। এরপর তাঁরা প্রথম আলোর কয়েকটি কপিতে আগুন দেন।
এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগে থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
গত শনিবার ‘চা বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রথম আলোর আন্তর্জাতিক খবরের পাতায় নরেন্দ্র মোদির জীবনী ছাপা হয়। তাতে বলা হয়, ‘১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর মোদি আরএসএসের প্রচারক হিসেবে যোগ দেন।’
তবে কেউ কেউ ফেসবুকে সমালোচনা করে বলেন, এর মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা হয়েছে। এমন অবস্থায় গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর ফেসবুক পেজে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে প্রথম আলো বর্জনের ডাক দেন। তাঁর এই স্ট্যাটাসের দুই দিন পর আজকের এ কর্মসূচি পালিত হলো।
তবে ১৭ মে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরদিন ১৮ মে প্রথম আলো প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়। তাতে বলা হয়, ‘চা বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী’ প্রতিবেদনটির তথ্যসূত্র ছিল বার্তা সংস্থা আইএএনএস। প্রতিবেদনের সূত্রের তথ্য হুবহু রাখা হয়। বার্তা সংস্থার তথ্যসূত্র ধরেই বলা হয়, আরএসএসের প্রচারক হিসেবে মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন ১৯৭১ সালে ‘পাক-ভারত যুদ্ধের পর’।
ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, ‘১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। হয়তো সে কারণে নিজস্ব প্রেক্ষাপটে কোনো কোনো বিদেশি গণমাধ্যম কখনো কখনো একে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধও বলে থাকে। কিন্তু ১৯৭১ সালে বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের বছর হিসেবেই সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত।’