জাবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, জাবিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় ফাতেমা আক্তার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার জের ধরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় দুর্ঘটনায় ছাত্রীর মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধ শুরুর দিকে শিক্ষার্থীরা শান্ত থাকলেও সন্ধ্যার পর তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত প্রায় ২০-২৫টি গাড়ি ভাঙচুর এবং চারটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সাভারগামী গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া, বুধবার রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলে নিতে না পারায় সহিংস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও শিক্ষার্থীরা ওই দু’টি গাড়িতেও ভাঙচুর করেন।
নিহত ফাতেমা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি প্রীতিলতা হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। ফাতেমা পাবনার আতাইকুলার ষোলাবাড়িয়ার আফসার আলীর মেয়ে।
আহত দুইজন হলেন-রেহানা আক্তার ও নুরুল ইসলাম। এদের উদ্ধার করে নিকটস্থ সুপার ক্লিনিকে ভর্তি করানো হলেও অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রেহানাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে ইউনিলিভারে কর্মরত নুরুলকে সুপার ক্লিনিকেই ভর্তি রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজমুল তালুকদার এ দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ঢাকামুখী পার্শ্বে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন ফাতেমাসহ তিন জন। এসময় আরিচামুখী কেয়া পরিবহনের একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে রাস্তার পাশে অপেক্ষায় থাকা ফাতেমাসহ তিনজনকে চাপা দেয় ঢাকামুখী পিকআপ ভ্যানটি। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ফাতেমা। তবে চালকসহ ঘাতক পিকআপ ভ্যানটিকে আটক করা হয়।
সাভার মডেল থানার সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) জামিল হোসেন জানান, ওই শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ঘাতক পিকআপ চালক। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরত্বে সিএন্ডবি বাসস্ট্যান্ডে অপর একটি বাসের সঙ্গে ওই পিকআপ ভ্যানটির সংঘর্ষ হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম জানান, সিএন্ডবি স্ট্যান্ডে সংঘর্ষের পর আহত চালক এবং পিকআপ ভ্যানটিকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সুপার ক্লিনিক থেকে ফাতেমার লাশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনা হবে। এখানে জানাজার পর তার লাশ স্বামীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি পাবনায় নিয়ে যাবেন স্বামী।