আত্মবিশ্বাসী ছিলাম : প্রধানমন্ত্রী

sheikh shekh hasina শেখ হাসিনাসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা ও দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পরও জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে থাকার ব্যাপারটি অনেকে ভাবতে না পারলেও নিজে এ বিষয়ে ‘আত্মবিশ্বাসী’ ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা থাকা অবস্থায় আমরা সরকার গঠন করেছিলাম। অনেকেই ভাবতে পারেননি যে, বাংলাদেশের মতো একটি দেশ জিডিপি ৬ ভাগের ওপরে ধরে রাখতে পারবে।

“আর এবার তো অনেকেই অনেক রকম প্রেডিকশন দিয়েছিলেন। তার জন্য কিছুটা রাজনৈতিক অবস্থাও দায়ী ছিল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পরিবেশ খারাপের দিকে যাচ্ছিল । সেজন্য অনেকেই খুব সন্দিহান ছিলেন যে, বাংলাদেশ পারবে কিনা।”

“আমি কিন্তু খুব আশাবাদী এবং আমি সবসময় একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলি,” বলেন শেখ হাসিনা।

বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ১২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে উন্নয়নের সারিতে থাকা কয়েকটি দেশের প্রবৃদ্ধি কমলেও গত পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশ ৬ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

উন্নয়নে নানা ধরনের বাধার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ কিন্তু একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, অন্যদিকে আবার মানবসৃষ্ট দুর্যোগের দেশ। এসব অবস্থা মোকাবেলা করে আমি এগিয়ে যেতে পারবো এবং আমরা কিন্তু তা করতে পেরেছি।”

বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় ১০৪৪ ডলার থেকে বেড়ে ১১৯০ ডলার হয়েছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে তা ২০০০ ডলারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথাও বুধবারই পরিকল্পনামন্ত্রী মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা চেয়েছি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় উন্নত, সম্মৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা ইনশাল্লাহ তা পারবো। এ বিশ্বাস আমার আছে।

“অর্থনৈতিক অগ্রগতি যেটা আমরা সুচনা করেছি তা কিন্তু অব্যাহত আছে। এতো বাধা বিপত্তির পরও মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জিডিপি বেড়েছে, মূল্যস্ফীতিও আমরা অনেক কমিয়ে এনেছি।”

এসময় শেখ হাসিনা দেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে আরো উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দিয়ে বলেন, “দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে এ মন্ত্রণালয় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

বিশ্ব বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাছ, মাংসসহ হালাল খাদ্য রপ্তানি বাড়ানোর জন্য তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন বাজার খোঁজারও আহ্বান জানান তিনি।

একইসঙ্গে দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা বাড়াতে আরো বেশি আমিষ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনেরর পরামর্শ দেন তিনি।

এই লক্ষ্যে চরাঞ্চলে মহিষ চাষ বাড়ানো, কালো ছাগল ও ভেড়া খামার বৃদ্ধি করা এবং গভীর সমুদ্র থেকে মৎস্য সংগ্রহ বাড়ানোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া প্রজননের সময় ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় যেসব জেলে বেকার থাকেন, ওইসময় তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ