উজিরে খামখা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রেলের কেলেঙ্কারী ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পরেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। কয়েক দিন পর দফতর ফিরে না পেলেও পতাকা ফিরে পান তিনি। তবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের সুনামগঞ্জ-২ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও নয়া মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি তার। জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকলে রাজধানীর ঝিকাতলার নিজস্ব বাসভবনে বই আর পত্রিকা পরেই সময় কাটান তিনি।
রেলের কেলেঙ্কারীর পর গন-মাধ্যমের দেওয়া ‘কালো বিড়াল’ উপাধি নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এতই আলোচিত হন, যে তাকে এখন দেশের মানুষের চিনতে পৈত্রিক নাম বলার প্রয়োজন হয় না। ‘কালো বিড়াল’ বললেই যথেষ্ট। কালো বিড়াল খ্যাত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে এখন আর তেমন একটা টকসোতেও দেখা যায়না। ডাকাও হয়না তাকে। তবে সপ্তাহে দু’একদিন আওয়ামী লীগের নাম সর্বস্ব কোন সংগঠেনের ডাকে ছুটে আসতেই হয় জাতীয় প্রেসক্লাব অথবা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে। কথা বলতেই হয় নিজেকে সক্রিয় রাখতে। তা নাহলে আবার মন্ত্রিসভার মত আলোচনা থেকেও হারিয়ে যেতে পারেন, এমন ভয়ও কাজ করে ষাট উর্ধো এ্ই প্রবিন রাজনীতিকের।
মন্ত্রীত্ব হারানোর পর বেশ কিছুদিন তাকে কোন আলোচনায় আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। লোক-চক্ষুর আড়ালেই চলে গিয়েছিলেন। এর পর আবার সেই সত্য-মিথ্যা মিথ্যা-সত্যের ফুল ঝুড়ি নিয়ে গণ-মাধ্যমে আবির্ভাব। যেমনটি হয়েছে, সামপ্রতিক সময়েরে আলোচিত নারয়নগঞ্জের ৭ খুন ও ফেনীর একরামূলকে গুলি করে পুরিরয়ে মারার মত পৈচাশিক দুটি ঘটনা নিয়ে চুপ থাকতে পারেননি তিনি। গতকাল (শুক্রবার) বলেছেন- ‘নারায়নগঞ্জ লক্ষ্মীপুর ফেনীর হত্যা একই সূত্রে গাথা। একটি মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে সুপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে!’
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এমন রাজনৈতিক বক্তব্য তখনই, যখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নির্ঘুম রাত কাটিয়ে নারায়নগঞ্জ ও ফেনীর পৈচাশিক ঘটনা প্রায় উন্মোচন করে ফেলেছেন। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যার মূল আসামিদের ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই হত্যার মূল আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। র্যাবকে দিয়ে নারয়নগঞ্জের ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন, যাদের নাম বেড়িয়ে আসছে, তারা আওয়ামী লীগের কর্মী নন, ডাকসাইটের নেতা। যারা এই ক্ষমতাসীন দলকে নারায়নগঞ্জে নিয়ন্ত্রন করতেন। সবই জানেন, সবই বোঝেন সুরঞ্জিত দাদা, তবুও কেন বিবেক বুদ্ধি নির্বাশন দিয়ে দলের শুরে শুর মিলিয়ে মিথ্যার শ্রোতে গা-ভাসিয়ে দেন, তা দেশের সাধারণ মানুষের বুঝতে কষ্ট হয়। অনেকেই মনে করেন, আলোচনায় থাকতে এটাই বুঝি ঢাল-তলোয়ার ছাড়া কোন নিধিরাম সরকারের ব্যর্থ চেষ্টা।
এ বিষয়ে শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্বরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘আমাকে কেই যদি নিধিরাম সরকার বলে অভিহিত করেন, তাতে আমারতো কিছু করার নেই। আমি আগেও যা ছিছলাম এখনও তাই আছি। আগেও সত্য বলেছি, এখনও বলছি। দু’এক সময় রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে গিয়ে একটু আধটু বেশি বলা হয়, এটা আমিও বুঝি।’