শামীম ওসমানকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে তদন্ত কমিটি
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নারায়নগঞ্জে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি এবার স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের পর মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সঙ্গে টেলি-সংলাপ ছাড়াও নানাভাবে আলোচিত হওয়া এই সাংসদকে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে শুনানির জন্য ডাকা হতে পারে সচিবালয়ে। হত্যাকান্ডে নারায়নগঞ্জের এই গডফাদারের অবস্থান কি ছিল, সে বিষয়ে পরিস্কার হতে চায় তদন্ত কমিটি। আগামী ৫ জুন এই কমিটি হাইকোর্টে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করবে। নির্ভযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের এই ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গতকাল রোববার) সচিবালয়ে নারায়নগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল ও সাবেক পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
তদন্ত কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘আরোচিত এই হত্যাকান্ডে নানাভাবে নারায়নগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম এসেছে। সর্ব শেষ তিনি নিজে স্বিকার করেছেন, হত্যাকান্ড ঘটানোর পর নূর হোসেনের সঙ্গে তার (শামীম ওসমানের) কথা হয়েছে। এই কথার ভিডিও টেপও সংগ্র করা হয়েছে। এখন হত্যাকান্ডে তার অবস্থান কি ছিল, সে বিষয়টি আমাদের পরিস্কার হতে হবে। মূলতঃ সেই কারণেই আমরা তার বক্তব্য শুনবো।’ আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাকে কমিটির সামনে হাজির হতে পত্র দেওয়া হতে পারে বলেও জানান তদন্ত কমিটির এই সদস্য।
প্রামিনিউজ.কম.বিডিকে তিনি আরো বলেন, ‘হত্যাকান্ডের বিষয়ে কমিটি এ পর্যন্ত যেসব তথ্য জানতে পেরেছে, তাতে হত্যাকান্ডের কারণ ও হত্যাকান্ডের সঙ্গে কারা সংশ্লিষ্ট ছিল বা নূর হোসেন কাদের এই হত্যাকান্ডে ব্যবহার করেছে, তা পরিস্কার হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নাসিক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও এাডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের শীতালক্ষা নদী থেকে নজরুল ও চন্দন সরকারসহ অপহৃত ৬ জনের এবং এর একদিন পর ১ মে বাকি ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
অপহরণে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় র্যাবের-১১ সিও (অধিনায়ক) লে.কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারনে নারায়নগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোজকান্তি বড়াল ও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ২৯ এপ্রিল প্রত্যাহার করা হয়। অপহরনের পর হত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ স্পষ্ট হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৫মে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেনকে সেনাবাহিনী থেকে এবং নারায়নগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।