ইউপি উপ-নির্বাচনে আ.লীগের কেন্দ্র দখল, বিএনপি প্রার্থীর বর্জন
প্রতিনিধি, এবিসি নিউজ বিডি, ফরিদপুরঃ জেলার সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়ন উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ভোট কেন্দ্র দখলে নিয়েছে এমন অভিযোগ এনে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী। মঙ্গলবার সকাল থেকে এ উপ-নির্বাচনে ভোট শুরুর পর পরই দলের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এনায়েত হোসেন। মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এ প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, “প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। তাই আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।” তবে উপ-নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা ও সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, এমন কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে ওইসব স্থানে বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন কোথাও কোনো সমস্যা নেই। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে বলে দাবি করেন রিটানিং কর্মকর্তা। ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় পদটি শূণ্য হয়। এখানে আওয়ামী লীগের সমর্থনে আনারস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন ওহাব মাতুব্বর। এ ইউনিয়নের ১২ হাজার ২৩৯ ভোটার ৯টি কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। সকালে সরেজমিনে ভাওয়াল ইউপির দরগা বাড়ি মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া, যুবলীগ নেতা মনজু খন্দকার ও ইটালিপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান ভোট কেন্দ্রের প্রবেশ পথে বসে আছেন। তাদের না বলে কেউ ভিতরে যেতে পারছেন না বলে ভোটারদের অনেকে অভিযোগ করেন। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কোনো এজেন্ট এখানে পাওয়া যায়নি। ভোট কেন্দ্রের মধ্যে দাঁড়িয়ে ধূমপান করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ নেতাদের। ভোটার উপস্থিতি এখানে তেমন নেই। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সকালে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টরা আসলেও কিছুক্ষণ পর তারা বের হয়ে যান। তারা না থাকলে আমি কী করতে পারি। তিনি জানান, তার কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ২৩৯ ভোটারের মধ্যে বেলা ১০টা পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে। একই অবস্থা নারানদিয়া জয়নদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পাশের নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন ভোট কেন্দ্রের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। তবে এ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। সাংবাদিকরা প্রবেশ করলে কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের ১০-১২ জন নেতাকর্মী বের হয়ে যান। এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা অসিত কুমার সাহা জানান, কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৯৬ ভোটের মধ্যে বেলা ১১টার আগেই পড়েছে প্রায় ৯০০ ভোট। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এনায়েত হোসেন উপ-নির্বাচনে অনিয়মের জন্য প্রশাসনকেও দায়ী করে বলেন, প্রশাসনের সহয়তায় সকাল ৯টার মধ্যে বহিরাগতদের দিয়ে ভোট কেটে বাক্স বোঝাই করে ফেলেছে আনারস প্রতীকের সমর্থকরা। তিনি বলেন, “আমার ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা কেন্দ্র দখল করে রেখেছে। আমি প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করেছি।”