সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রচলনে সময় বাড়লো
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দেশের অফিস আদালতসহ সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রচলনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আরও এক মাস সময় বাড়িয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রিটকারী আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বিষয়টি এবিসি নিউজ বিডিকে নিশ্চিত করেছেন। ইউনুস আলী বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ, তথ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে আগামী একমাসের মধ্যে সর্বত্র বাংলা প্রচলনের আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি তার প্রতিবেদন আগামী ১ জুলাই দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।’ সরকারে ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় বাংলা ভাষা প্রচলনের আদেশ বাস্তবায়নে আরও সময় প্রয়োজন বলে আবেদন করেন। পরে হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। শুনানিতে ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘গত ১৫ মে বাংলা ভাষা প্রচলনের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা থাকলেও সরকারের সংশ্লিষ্টরা তা বাস্তবায়নে চিঠি-পত্র চালাচালি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সময়েরে প্রয়োজন রয়েছে। তাই আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করছি।’ পরে সময় বাড়িয়ে দিয়ে আদেশ দেন আদলত। তার আগে গত ২৯ এপ্রিল ১৫ মের মধ্যে দেশের অফিস আদালতসহ সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রচলনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। বাংলা ভাষা প্রচলনে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সরকারের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পর এই আদেশ দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। একইসঙ্গে আদালত ওই দিন তার আদেশে বলেন, বাংলা পত্রিকায় বাংলায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে এবং ইংরেজি পত্রিকায় ইংরেজিতে বিজ্ঞাপন দিতে পারবে। তবে অন্য সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি একই বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে সব বিদেশি ভাষার বিজ্ঞাপন এবং গাড়ির নেমপ্লেট বাংলায় পরিবর্তনের জন্য কেনো নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইনসচিব, স্বরাষ্টসচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রারকে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী আকন্দ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। জানতে চাইলে আইনজীবী ইউনুস আলী জানান, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩নং অনুচ্ছেদে রয়েছে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা হবে বাংলা। এছাড়া ১৯৮৭ সালে এরশাদ সরকারের আমলে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’প্রণয়ন করা হয়। বাংলা ভাষা প্রচলন আইন ১৯৮৭ এর ৩ নং ধারায় বলা হয়েছে, দেশের সব অফিস আদালতে বাংলা ভাষার প্রচলন করা হবে। কিন্তু তার বাস্তবায়ন করা হয়নি।