স্ত্রী ও সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, নারায়ণগঞ্জঃ ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রীকে বঁটি দিয়ে কোপাচ্ছিলেন সুমন মিয়া। ঘরে থাকা কিশোরী মেয়ে তা দেখে চিত্কার করে ওঠে। তার ওপরও বঁটি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন সুমন।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে এভাবে স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা করেন সুমন (৩২)। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝি মক্কীনগর মাদ্রাসা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন ময়না বেগম (৩০) ও তাঁর মেয়ে স্বপ্না (১৩)। সুমনের ব্যাপারে ময়নার বোন বেবী বেগম বলেন, ‘সে মাদকসেবন করে বলে আমার ধারণা।’
ভোর ছয়টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ জহুরুল হক ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ‘গিয়ে দেখি, সুমন মিয়া তার ছেলে ইমনের গলায় চাকু ধরে আছে। আমাকে দেখেই বলে উঠল, “দরজা খুলে না দিলে ইমনকেও মেরে ফেলব।” কৌশল হিসেবে সুমনকে বলি, “তুমি জানালার কাছে আসো। তোমার সঙ্গে কথা আছে।” তখন সুমন জানলার কাছে আসে। এলে তাঁর হাত টেনে ধরে হাতকড়া দিয়ে গ্রিলের সঙ্গে আটকে দিই।’
নিহত ময়নার বোন বেবী বেগম জানান, সুমন ও তাঁর বোন ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরে সুমন বাড়িভাড়া দিতে পারে না। গতকাল রাতে ভাড়া দেওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়।’ বেবী জানান, একসময় সুমন কাপড়ের ব্যবসা করতেন। এখন কিছু করেন না।
সুমনের ব্যাপারে বেবী বলেন, ‘সে মাদকসেবন করে বলে আমার ধারণা।’ এ ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি।
বেবী জানান, গতকাল গভীর রাতে বোনের মেয়ে স্বপ্নার চিত্কারে তাঁরা জেগে উঠে ছুটে যান। কিন্তু ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান। মাকে কোপানোর কথা স্বপ্না চিত্কার করে সবাইকে জানালে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করে সুমন।
প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে ওসি আলাউদ্দিন জানান, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে সুমন মিয়ার ঘর থেকে চিত্কার হচ্ছে শুনে প্রতিবেশীরা জেগে ওঠেন। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় তাঁরা ঘরের জানালা দিয়ে দেখেন, সুমন বঁটি দিয়ে তাঁর স্ত্রী ময়নাকে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছেন। এ সময় স্বপ্না তার মাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় এবং চিত্কার করতে থাকে। এ সময় সুমন তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন। প্রতিবেশীরা ভয় পেয়ে ঘরের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দিয়ে পুলিশে খবর দেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ওসি বলেন, লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।