৭ খুনের মাস্টারপ্ল্যানে ২ জনকে হত্যার অনুমোদন ছিল
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত গুম ও অপহরণের মাস্টারপ্ল্যানে দু’জনকে হত্যার অনুমোদন ছিল। তারা হলেন, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন। সেভেন মার্ডারের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গ্রেফতার হওয়ার পর রিমান্ডে থাকা তিন র্যা ব সদস্যের বরাত দিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নূর হোসেনের মূল শত্রুতা ছিল প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তবে নজরুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন এলাকায় নজরুলকে নানাভাবে সহযোগিতা করায় তার প্রতিও তার ক্ষোভ ছিল। এ কারণে এই দু’জনকে হত্যার বিষয়ে নূর হোসেন র্যা ব-১১-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক পরিকল্পনা করেছিলেন। সূত্র আরও জানায়, সে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি ছিল র্যা ব কর্মকর্তাদের। তাদের মধ্যে দু’জন মাঠ পর্যায়ে থেকে কাজ বাস্তবায়ন করেছেন। আরেকজন অফিসে বসে ‘দায়িত্বশীল’ জায়গা থেকে ইতিবাচক নির্দেশ পাওয়ার পর দু’জনকে হত্যার গ্রিন সিগন্যাল দেন। এই সিগন্যাল কার্যকর ছিল দু’জনের জন্য। কিন্তু দু’জনের জায়গায় সাত জনকে খুন করায় সব পর্যায়ের মাস্টার প্ল্যানাররাও অবাক হয়ে যান। বিশেষ করে প্রবীণ আইনজীবী চন্দন সরকার হত্যা বিষয়টিকে ‘মাস্টারপ্ল্যানের’বাইরে নিয়ে যায়। ঘটনা যখন আয়ত্বের বাইরে চলে যায় তখন কেউ কারও দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। র্যা ব থেকে প্রত্যাহার হন ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা। নিজেদের বাহিনী থেকেও অকালীন অবসর পান। অনেক নাটকীয়তার পর হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রেফতার হন তারা। তদন্তে ক্রমেই নতুন তথ্য দিতে থাকেন এই তিন কর্মকর্তা। ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তৃতীয় দফা পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন তারা। তবে, সাত হত্যার ঘটনায় নাম উল্লেখ করে যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তাদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করা ছাড়া নতুন কিছু বলতে পারি না। পুলিশ তদন্ত করছে। তাদের ওপর ভরসা করা ছাড়া কী বলবো।’ মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে দাবি করলেও তা কতটুকু আস্থাযোগ্য জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. মহিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থেই আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছু বলছি না। কারণ এটি অনেক বড় মামলা। অগ্রগতির বিষয়গুলোও টুকরো টুকরো করে মিলাতে হয়। তাই সুনির্দিষ্ট সময় বা কোনো পার্সেন্টেজ আমার বলা সম্ভব নয়। যদিও কেউ কেউ আমাকে কোট করে মামলার অগ্রগতির পার্সেন্টেজ লিখছেন, এগুলো সত্য নয়।’ এজহারভুক্ত আসামিদের একজনকেও গ্রেফতার করতে না পারার বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘এজাহারে যাদের নাম উল্লেখ থাকে শুধু তাদের বিষয়েই অনুসন্ধান করা তদন্তের মূল বিষয় নয়। আমরা মাঠে নেমে যেই বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি সেটিই আগে করছি। মামলায় নাম উল্লেখ থাকলেই একজন দোষী হবেন- এমনটা ভাবার কারণ নেই।’