প্রয়োজন হলে ওসমানদের দেখাশোনা করব: প্রধানমন্ত্রী

sheikh hasina shekh শেখ হাসিনাসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের প্রয়োজন হলে দেখাশোনা করব। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। নাসিম ওসমানের শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় তিনি ওসমান পরিবার সম্পর্কে বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, এ পরিবারটি বারবার আঘাতের শিকার হয়েছে। আইয়ুব-ইয়াহিয়ার শাসনামলে ও মুক্তিযুদ্ধের সময়, পঁচাত্তরের পরে এ পরিবারের ওপর আঘাত হয়েছে। যখন যে সরকার এসেছে কখনো না কখনো এ পরিবারের ওপর হামলা-নির্যাতন করেছে। রাজনৈতিকভাবে ‘হেয়’ করতে ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য, কোনো পরিবারকে ধ্বংস করার জন্যে যে প্রচেষ্টা এ বিষয়ে জাতিকে সজাগ থাকতে হবে। গণমাধ্যমে ‘অপপ্রচারের’ বিষয়টিও তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে থাকে, যারা বারবার আঘাতের লক্ষ্যে পরিণত হয়। অনেকে অনেক অপরাধ করে, তা কেউ দেখে না। কিন্তু, তার থেকে ঘটনাচক্রে কম অপরাধ করেও ঘটনার শিকার হয়। ক্ষেত্র বিশেষে সামান্য কিছু হলে বড় করে লেখা হয়। পরিবারটির রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, নাসিম ওসমান, শামীম ওসমানের দাদা খান সাহেব ওসমান আলী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠকদের অন্যতম। তার বাড়িতেই দল গঠনের প্রথম বৈঠক হয়। নাসিম ও শামীমের বাবা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য একেএম শামসুজ্জোহা বাংলাদেশের প্রথম সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। এক সময় আওয়ামী লীগ করলেও পরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য হন নাসিম ওসমান। আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানও সংসদ সদস্য হয়েছেন একাধিকবার। তাদের অন্য ভাই নাসিমের আসনে আসন্ন উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে এই ওসমান পরিবারে। এখনও দল গঠন থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি হয়েছে। রাজনীতির নীতি আদর্শ নিয়ে চলতেন জোহা কাকা। এই পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল সব সময়। যদি তাদের প্রয়োজন হয় দেখাশোনা করব। পঁচাত্তর পরবর্তী স্মৃতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন অসহায় অবস্থায়, আমরা যখন ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিই। ১৯৭৮ সালে জেলখানা থেকে মুক্ত হয়ে জোহা কাকা কাকীকে আর পরিবারের সদস্যকে নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন। অল্প যে কয়েকজন আমাদের খবর নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে জোহা কাকা অন্যতম। একাত্তরে শামসুজ্জোহার অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে চলে এসেছিলেন ১৮ নম্বরের ওই বাড়িতে, যে বাড়িতে আমাদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল। জোহা কাকাসহ কয়েকজন ১৮ নম্বর রোডে যান। বাড়ির ছাদ থেকে গুলি চালায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী। জোহা কাকা গুলিতে আহত হন। ১৫ আগেস্টের আগের দিন নাসিম ওসমানের বিয়ে হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবপরিণতা বধূকে ফেলে রেখে এই হত্যার প্রতিশোধ নিতে নাসিম চলে যায়। কোনো টান তাকে আটকাতে পারে নাই। সে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেবে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেনকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ ওঠে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগের পাশাপাশি ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন এই সংসদ সদস্য।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ