বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কক্সবাজারঃ মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে দু’পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। ফলে সীমান্ত অধিবাসীরা কাটাচ্ছেন চরম আতঙ্কে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুরো সীমান্ত জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য। সেন্টমার্টিন ও শাহপরীরদ্বীপের মাঝামাঝি জল সীমানায় মিয়ানমার নৌ-বাহিনীর তিনটি জাহাজ অবস্থান নেওয়ায় বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীও মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্রমতে, গত বুধবার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিয়মিত টহল চলাকালে পাইনছড়ি বিজিবির নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান মিয়ানমারের বিজিপির গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কেএম তারিকুল ইসলাম ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরির্দশন করেন। এসময় জেলা প্রশাসক কেএম তারিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমার বেশি বাড়াবাড়ি করে গায়ে পরে কিছু করার চেষ্টা করলে আমরাও তার প্রতি কড়া জবাব জানাতে প্রস্তুত রয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সে জন্য মিয়ানমার সরকার দায়ী। এ মুহূর্তে কুটনৈতিক পর্যায়ে ঢাকা ও মিয়ানমারে পৃথক বৈঠকের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু সমাধানের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে সরকার।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের বিপরীতে বিজিপির পাশাপাশি মিয়ানমার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে। তারা সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশও দিয়েছে। ফলে মংডু শহরে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী ওয়ালিদং, ফকিরাবাজার, সাহাব বাজার, তুমব্রু, ঢেকিবনিয়া, নাইচাদং, পেডানপুরো, বলিবাজারসহ প্রভৃতি গ্রামের রোহিঙ্গা মুসলমানদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শফিকুর রহমান জানান, সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি গভীর পর্যবেক্ষণ করে সীমান্ত জুড়ে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্যদের কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, তারা এখনো সীমান্ত এলাকায় সেনা শক্তি বৃদ্ধি করে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। কক্সবাজার ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, ‘সীমান্ত পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামী ৫ জুন বৃহস্পতিবার দুই দেশের সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে বিজিবি কর্মকর্তা নিহত হওয়ার বিষয়ে মিয়ানমার থেকে জবাব চাওয়া হবে।’ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মুজাহিদ উদ্দীন জানান, সেন্টমার্টিন ও শাহপরীরদ্বীপ এলাকার মাঝামাঝি জল সীমানায় মিয়ানমারের নৌ-বাহিনীর জাহাজ অবস্থান করছে। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর একটি জাহাজও জল সীমানায় অবস্থান করছে।