সাত খুনের দায় স্বীকার করে রানারও জবানবন্দি
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আজ বৃহস্পতিবার জবানবন্দি দিয়েছেন র্যাব-১১-এর আরেক সাবেক কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এম এম রানা। জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ও নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি ফজলুর রহমান এবিসি নিউজ বিডিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সাখাওয়াত হোসেন এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘সাত খুনের ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে লে. কমান্ডার রানা নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিনের খাসকামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি ফজলুর রহমানও এবিসি নিউজ বিডি’র কাছে একই কথা বলেছেন।
জবানবন্দি শেষে বিকেল পৌনে চারটার দিকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিন এম এম রানাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর রানাকে এজলাসে না তুলে খাসকামরা থেকে সরাসরি জেলা আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার সকালে জবানবন্দি দেন র্যাব-১১-এর সাবেক কর্মকর্তা মেজর (অব.) আরিফ হোসেন। নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
জবানবন্দিতে আরিফ কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ এবং তারপর হত্যার পুরো বর্ণনা দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, জবানবন্দিতে আরিফ বলেছেন, এই অপহরণ ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেন। আরিফ এবং র্যাব-১১-এর তত্কালীন অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, লে. কমান্ডার এম এম রানাসহ র্যাবের ১১ জন সদস্য অংশ নিয়েছিলেন। জবানবন্দিতে আরিফ দাবি করেন, কেবল তাঁরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ঘটনা ঘটাননি। র্যাবের সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও বিষয়টি জানতেন।
তারেক আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে: নজরুলসহ পাঁচজনকে হত্যা মামলায় তৃতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ায় লে. কর্নেল তারেক সাঈদ ও মেজর আরিফকে গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নারায়ণগঞ্জের আরেক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইশতিয়াক আহম্মেদ সিদ্দিকীর আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এর মধ্যে আরিফ দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ায় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। আর পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবী চন্দন সরকার হত্যা মামলায় তারেক সাঈদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।