গা ঢাকা দিয়েছেন দিপু চৌধুরী
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ গা ঢাকা দিয়েছেন দিপু চৌধুরী। নারায়ণগঞ্জে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় ঘুরে-ফিরে আলোচনায় থাকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দিপুর হদিস মিলছে না। নির্মণাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়কের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, গুলশানের ক্লাব পাড়া, বনানীর সুইট ড্রিমসহ তার বাসভবনেও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় তিনি, এমন প্রশ্নের উত্তরও মিলছে না পরিবারের কারো কাছ থেকে। ব্যবহার করা মোবাইল ফোন ০১৭৪৫-৬৬৭৭৪৭ প্রায় তিন দিন ধরে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। অনুসন্ধানী এই প্রতিবেদন তৈরি করতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় নানাভাবে আলোচনায় আসা দিপু চৌধুরীকে পাওয়া যায়নি। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য গাজীপুরে নির্মিত অস্থায়ী কার্যালয়ে দিপু চৌধুরীকে পাওয়া যায়নি। প্রতিদিন এখানে তিনি একবারের জন্য হলে আসতেন। গত তিন দিন সেখানে যাননি দিপু চৌধরী। গুলশানের ক্লাবপাড়ায় ও বনানীর সুইট ড্রিমে তাকে প্রায় রাতেই দেখা যেত। সেখানেও অনুপস্থিত প্রায় চারদিন ধরে। এছাড়া মায়া চৌধুরীর বনানীর বাসভবনেও তাকে পাওয়া যায়নি। এখানেই পরিবারের সঙ্গে থাকতেন দিপু চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে মায়া চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও তাকে পাওয়া যায়নি। চাঞ্চল্যকর নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় পরোক্ষভাবে দিপু চৌধুরীর নাম বেরিয়ে আসে। অভিযোগ রয়েছে, দিপু ৭ খুনের ঘটনার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সঙ্গে তার আত্মীয় র্যা ব-১১’র সাবেক সিও তারেক সাঈদের পরিচয় করিয়ে দেন। দিপু চৌধুরীই ৭ খুনের অর্থ লেনদেনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নাসিক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের শীতালক্ষ্যা নদী থেকে নজরুল ও চন্দন সরকারসহ অপহৃত ৬ জনের এবং এর একদিন পর ১ মে বাকি ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। অপহরণে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠায় র্যা বের-১১ সিও (অধিনায়ক) লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোজকান্তি বড়াল ও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ২৯ এপ্রিল প্রত্যাহার করা হয়। এর পর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ স্পষ্ট হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৫ মে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেনকে সেনাবাহিনী থেকে এবং নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম.এম রানাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।