জিম্মিদশার পর ফিরলেন ৭ নাবিক

7 sailors নাবিকসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে সাড়ে তিন বছরের জিম্মিদশা শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশি সাত নাবিক। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা। এ সময় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব রিয়াল অ্যাডমিরাল (অব. সমুদ্র সীমা) খুরশিদ আলম বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে তাদের গ্রহণ করেন। নাবিকরা শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন মেরিটাইম পাইরেসি অ্যান্ড হিউমেনিটারিয়ান রেসপন্স প্রোগ্রাম’র (এমপিএইচআরপি) প্রধান প্রকৌশলী চিরাগ বাহারি। তিনি জানান, শুক্রবার বিকেল ৫টায় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। গত শনিবার ছাড়া পান নাবিকরা। এরপর এসব নাবিক কেনিয়ার নাইরোবিত ছিলেন। বাংলাদেশ সরকার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্যোগে মুক্তি পান তারা। এসব নাবিকরা হলেন সাতক্ষীরার গোলাম মোস্তফা, হাবিবুর রহমান, আবুল কাশেম সরকার ও নুরুল হক, চাঁদপুরের লিমন সরকার এবং চট্টগ্রামের আমিনুল ইসলাম ও জাকির হোসাইন। ২০১০ সালের ২৬ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আলবেদো ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। এসময় ওই জাহাজে বাংলাদেশি এ সাত নাবিক ছিলেন। এরপর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই আলবেডো ডুবে যায়। এই নাবিকদের তখন ছিনতাই করা আরেকটি জাহাজ নাহাম-৩ এ তোলা হয়। এরপর থেকে জলদস্যুদের হাতেই আটক ছিলেন আলবেডোর ২২ নাবিক। এদের মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়াও ছিলেন সাতজন পাকিস্তানি, ছয়জন শ্রীলঙ্কান, একজন ভারতীয় ও একজন ইরানি। ছিনতাইয়ের পর জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে তাদের স্বজনদের দাবির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা শুরু হয়। এ লক্ষ্যে মেরিটাইম পাইরেসি অ্যান্ড হিউমেনিটেরিয়ার রেসপন্স প্রোগ্রামের (এমপিএইচআরপি) সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়, আলোচনা হয় মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গেও। সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে সাধারণত মুক্তিপণ দিয়েই নাবিকদের উদ্ধার করতে হয়। তবে নীতিগতভাবে কোনো দেশের সরকারই জলদস্যুদের মুক্তিপণ দিতে পারে না। কিন্তু মুক্তিপণ ছাড়া জলদস্যুদের হাত থেকে কারো মুক্তি মেলে না। বিকল্প উপায় না থাকায় তিন বছরের মাথায় মুক্তিপণের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয় সরকারের। জলদস্যুদের দাবি করা ৬ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রের তিনটি তহবিল থেকে জোগান দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেয়। অবশেষে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক অফিস ইউএনওডিসি ও লন্ডনভিত্তিক মেরিটাইম পাইরেসি অ্যান্ড হিউমেনিটারিয়ান রেসপন্স প্রোগ্রাম (এমপিএইচআরপি) সহায়তায় মুক্ত করে আনা হয় অপহৃত নাবিকদের।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ