অব্যবস্থাপনা ও মিথ্যা তথ্যর জন্য ‘দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১৩’ এর অনুমোদন

bdসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দেবোত্তর সম্পত্তি অব্যবস্থাপনা ও মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ ১ বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জড়িমানার বিধান রেখে হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১৩ এর খসড়ার চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেষে মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভুমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৩ এর খসড়ার ও চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা। মন্ত্রীসভা মনে করে এ আইনের মাধ্যমে পাহাড়ি ও বাঙালি সবার জন্য কল্যাণকর হবে।

হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়ের সম্পত্তি (দেবোত্তর সম্পত্তি) ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও হস্তান্তরকে একটি সুনির্দিষ্ট আইনের আওতায় আনতে দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১৩-এর খসড়ার চুড়ান্ত করা হয়েছে ইটি এখন পাশের জন্য সংসদে পাঠানো হবে।

মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, এ আইনে দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও হস্তান্তর ও উন্নায়নের জন্য একটি বোর্ড গঠনেরও বিধান রাখা হয়েছে। এত দিন এ নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট বিধি বিধান না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে হিন্দু ধর্মালম্বীদের।

সচিব জানান, ‘হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট’-এর ভাইস-চেয়ারম্যান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত এ দেবোত্তর সম্পত্তি বোর্ডের প্রধান হবেন। বোর্ডের একজন প্রশাসক থাকবেন। সরকারের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন হিন্দু কর্মকর্তা প্রশাসকের পাশাপাশি এই বোর্ডের সদস্য সচিবও হবেন।

দেশের প্রত্যেক জেলাতেই দেবোত্তর সম্পত্তি বোর্ডের কার্যক্রম চলবে। এতে জেলা বোর্ডের প্রধান হবেন জেলা প্রশাসক। পদাধিকার বলেই জেলা প্রশাসকরা জেলা বোর্ডের প্রধান হবেন।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ও জেলা বোর্ডের মাধ্যমে হিন্দু ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর সম্পত্তির তালিকা তৈরি করা হবে। এসব সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন এবং প্রয়োজনের হস্তান্তর করা হবে। এতে অসৎ উদ্দেশ্যে হস্তান্তর এবং বেদখল হওয়া সম্পত্তি রক্ষা এবং উদ্ধার করা সম্ভব হবে। যা এ ধরণের সম্পত্তির ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহারও রোধ করবে।

তিনি আরো বলেন, দেবোত্তর সম্পত্তি অব্যবস্থাপনান জন্য দায়ীদের সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জড়িমানা এবং ১ বছরের কারাদন্ডের বিধান রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বোর্ডের কাছে মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীদেরও ১ বছরের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জড়িমানার ব্যবস্থা রয়েছে।

মন্ত্রী পরিষদ সচিব জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ’মি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনে- কমিশনের চেয়ারম্যান ও সংখ্যাগরিস্টদের মতামতের ভিত্তিতেই ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি করা হবে। পাশাপাশি এই আইনের প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রনয়ণের জন্য আগামী ৩ মাসের সময় দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ’মি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ১৯৯৭ সালে প্রনয়ণ কালে সেখানে ৬ মাসের মধ্যেই বিধিমালা করার কথা বলা হলেও তা করা সম্ভব হয়নি। সংশোধনিতে (সময় বেধে দেয়া) বিষয়টি তুলে দেয়া হয়েছে।

এই আইনে মূলত তিনটি বিষয়ে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে কমিশনের বৈঠকে সার্কেল চিফ এর অনুপস্থিতিতে তার প্রতিনিধিকে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া, এখানে অবৈধ দখল, অবৈধ বন্দবস্ত দেয়ার বিষয়টি এই কমিশন নিস্পত্তি করবে ও আইনের বাইরেও বৈধ মালিকদের হাত ছাড়া ভুমির জটিলতাও সমাধান করা হবে। কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্টদের সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করেই বিরোধ নিস্পত্তি করণ এবং কমিশনের প্রশাসনিক পদে নিয়োগে উপজাতি বা ক্ষুদ্র জন গোস্টিদের অগ্রাধিকার দেয়া।

মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, এর আগে ৪ টি কমিশন এখানে কাজ করেছে। বর্তমানের কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫ জন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যানসহ ৩ জনের মতামতই সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হবে। এছাড়াও ৪টি বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রীসভাকে অবহিত করা হয়েছে।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ