সাংবাদিকের টাকা ছিনতাইকারী ৩ পুলিশকে র্যাবের তলব
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সুশান্ত সাহা। পেশায় সাংবাদিক। কাজ করেন এক অনলাইন নিউজ পোর্টালের অপরাধ প্রতিবেদক হিসেবে। থাকেন তেজগাঁও থানার তেজকুনী পাড়ার ২১৭/২ নম্বর বাসায়। সারা দিনের কাজ শেষ করে রাত ১১টার দিকে বাসায় প্রবেশ করেন তিনি। এর ঘন্টা দু’য়েক পর রাত ১টার দিকে তেজঁগাও থানা পুলিশের একটি দল এসআই আমিনুল ইসলাম নেতৃত্বে এই বাড়িতে অভিযান চালায়। আমিনুলের সঙ্গে থাকা এসআই সাইফুর ও এএসআই জাহিদুর রহমান বাড়ির চেইনগেট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন। কয়েকজনকে আটক করে দড়ি দিয়ে কোমর বাঁধেন। বাঁধেন সুশান্ত সাহাকেও। পরিচয় জানার পরে বাড়ির নিচে নামিয়ে বেদহম প্রহার করেন তিন পুলিশ কর্মকর্তা। সুশান্ত সাহার মানিব্যাগে থাকা বেতনের ৮০০০ টাকা বের করে ভাগ করে নেন তারা। এরপর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ জানালে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপুর্ব হাসান সুশান্তকে ছেড়ে দেন। এ ঘটনাটি ৫ জানুয়ারীর সংসদ নির্বাচনের দু’দিন আগের। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘পুলিশের আটক বাণিজ্য’ নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টির পর গত ২০ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে র্যাবকে এই আটক বানিজ্যের তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এরপর থেকেই র্যাব অভিযুক্ত সব বিষয় আমলে নিয়ে তদন্তে নেমে পরে। আমলে নেয়া হয়েছে সেই তেজগাঁও থানার ঘটনাটিও। অভিযুক্ত তেজগাঁও থানার দুই এসআই আমিনুল, সাইফুর ও এএসআই জাহিদুরকে বুধবার দুপুরে তলব করা হয়েছে র্যাব-২এর কার্যালয়ে। স্বাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়েছে সাংবাদিক সুশান্ত সাহাকেও। সুশান্ত সাহা এবিষয়ে এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘আমি ছাত্র থাকাকালেও কখনও রাজনীতি করি নাই। এখনও না। কম আয়ে সাংবাদিকতা করে কোন রকম দিন কাটে। তেজগাঁও থানা পুলিশের এই তিন কর্মকর্তা আমাকে চেনার পরও কেন এমন করে পেটাল। আমরা মানিব্যগের টাকা তারা ভাগ করে নিল, তা আমার জানা দরকার। এখন যখন সারাদেশে পুলিশের আটক বাণিজ্যের তদন্ত শুরু হয়েছে। আমার মত অনেক নিরীহ মানুষ তাদের আটকের কারণ জানতে পারবেন। বিচার পাবেন। দেয়া অর্থ ও জমি ফেরৎ পাবেন।’ প্রসঙ্গত, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সারাদেশে পুলিশ আটক বাণিজ্য চালিয়ে নিরীহ সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কোথাও জমি লিখে নিয়ে জামায়াতের নেতাকে চেড়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এসব অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে র্যাবকে।