মানবতাবিরোধী অপরাধে আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, বাগেরহাটঃ মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি আকরাম হোসেন খানকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজশাহী মহানগরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল।
আকরামের বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের দৈবজ্ঞহাটি গ্রামে।
১০ জুন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল-১-এ আকরাম হোসেন খান ও আবদুল লতিফসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ৷এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল ওই তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন৷
তিনজনের মধ্যে আবদুল লতিফকে ১১ জুন বুধবার ভোররাতে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নের সোলারকোলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ওই দিনই তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়৷ পরের দিন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ তাঁকে কারাগারে পাঠান।
মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা জানায়, আবদুল লতিফ, আকরাম হোসেন খানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে৷ তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে৷ তাঁদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে কচুয়ার শাঁখারীকাঠি বাজারে একসঙ্গে ৪২ জনকে হত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি শাঁখারীকাঠি গণহত্যা নামে পরিচিত। নিমাই চন্দ্র দাস নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি ২০০৯ সালে আবদুল লতিফসহ ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের আদালতে মামলা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাগেরহাট জেলায় মোট ৬৩টি মামলা হয়েছিল৷ মামলাগুলোর প্রাথমিক তদন্ত শেষে ডাকরা গণহত্যা, শাঁখারীকাঠি গণহত্যাসহ কয়েকটি মামলা আমলে নেওয়া হয়েছে৷ নিমাই চন্দ্র দাসের মামলাটি সেগুলোর মধ্যে একটি৷
মোরেলগঞ্জ থানার ওসি মো. আসলাম খান এই প্রতিবেদককে বলেন, ১০ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল আকরাম হোসেন খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি রাজশাহীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন—এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোরেলগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। গতকাল রাত দুইটার দিকে এক নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শুক্রবার সকালে তাঁকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।