আকরামকে কারাগারে পাঠিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মো. আকরামকে (৬০) কারাগারে পাঠিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজ রোববার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আজ সকালে ট্রাইব্যুনালে আকরামকে হাজির করা হলে তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কি না—ট্রাইব্যুনাল জানতে চান। আকরাম আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়নি বলে জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষকে বলেন, আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার পরে তাঁর বিষয়ে বিচারিক কার্যক্রম চালানো হবে। পরে আকরামকে কারাগারে পাঠানো হয়।গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ট্রাইব্যুনাল বন্ধ থাকায় আকরামকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ওই আদালতও তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী নগরের নওদাপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে আকরামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি গ্রামে। ১০ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আকরাম ও আবদুল লতিফ তালুকদারসহ (৬৫) তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আকরামের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার শাঁখারীকাঠি বাজারে একসঙ্গে ৪২ জনকে হত্যা, বাজার লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। এই নৃশংসতা শাঁখারীকাঠি গণহত্যা নামে পরিচিত।
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হলে ২০০৯ সালে নিমাই চন্দ্র দাস নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি আকরাম ও আবদুল লতিফ তালুকদারসহ ২০ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের আদালতে মামলা করেন।
গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার হেলাল উদ্দিন জানান, আকরাম ও আবদুল লতিফ তালুকদারসহ ২০ থেকে ৩০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি ১৯৭১ সালের ৫ মে কচুয়া উপজেলার শাঁখারীকাঠি বাজারে গিয়ে নিরীহ লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং ৪২ জনকে হত্যা করেন। তিনি বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাগেরহাট জেলায় মোট ৬৩টি মামলা হয়েছিল। মামলাগুলো তদন্ত করে রামপাল উপজেলার ডাকরা গণহত্যা, কচুয়া উপজেলার শাঁখারীকাঠি গণহত্যাসহ কিছু মামলা আমলে নেওয়া হয়েছে। নিমাই চন্দ্র দাসের মামলাটি (শাঁখারীকাঠি গণহত্যা মামলা) গত বছরের ২১ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠালে আদালত তা আমলে নেন।
এর আগে ১১ জুন ভোরে কচুয়া উপজেলার রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নের সোলারকোলা গ্রাম থেকে আবদুল লতিফ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।