জনগণ উপলব্ধি করেছে আ.লীগ তাদের সঙ্গে আছে
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ বুঝতে পেরেছে আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে রয়েছে। তারা ক্ষমতার ভোগবিলাসে গা ভাসাতে আসেননি।
আজ শনিবার প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘সুইস ব্যাংকে কারা টাকা রেখেছে, সেই তালিকা পেয়েছি। ওই টাকা ব্যাংক থেকে যথাসম্ভব ফিরিয়ে এনে দেশের মানুষের উন্নয়নে ব্যবহার করব। উড়ে এসে যারা জুড়ে বসে, তারাই লুটপাট ও দুর্নীতি করে।
আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল। এই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করবে এবং জনগণ সেটা বুঝতে পেরেছে।’ নির্বাচনে অংশ নিয়ে রওশন এরশাদ ‘সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত’ নিয়েছেন বলে আজ মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘কিসের আশায় উনি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিলেন, আমি জানি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এটাই এখনকার বাস্তবতা। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে তাঁর সরকার জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করবে।
বাজেট নিয়ে সমালোচনার সুযোগ খুব একটা নেই
প্রধানমন্ত্রী বাজেটের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘এবারের বাজেট এমন বাস্তবমুখী, যা নিয়ে সমালোচনার সুযোগ খুব একটা নেই।’ সামাজিক নিরাপত্তা, প্রবীণ প্রতিবন্ধী ও গর্ভবর্তী মায়েদের কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে সবার দিকে নজর দিচ্ছে।
যাঁরা বিভিন্ন টক শোতে বাজেটের সমালোচনা করছেন, তাঁদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটা কাজ করেছি, অনেকগুলো টিভি চ্যানেল ও বেতারের অনুমোদন দিয়েছি। এসব চ্যানেলে মধ্যরাতে বসে সরকারের সবকিছু নিয়ে সমালোচনা করা হয়। রাতে ঘুম না পেড়ে এঁরা কী যে মজা পান, জানি না। তাঁরা এই বাজেটকে অবাস্তব, উচ্চাভিলাষী বলেন। আরও বলেন, বিনিয়োগ বাড়বে না, মুদ্রাস্ফীতি কমবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, এর আগেও বাজেট দেওয়ার সময় তিনি একই কথা শুনেছেন। কিন্তু দেশে রিজার্ভ প্রবৃদ্ধি ও রপ্তানি আয় বেড়েছে, মূল্যস্ফীতি কমেছে, উন্নয়ন বাজেটের ৯৬ ভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এখন ৪ কোটি ৯০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১১ কোটি সিম কার্ড রয়েছে। অথচ বিএনপি সরকারের সময় ফোন করলেও ১০ টাকা, না ধরলেও ১০ টাকা দিতে হতো। কারণ বিএনপির একজন মন্ত্রী ওই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রায় সব সেবামূলক কাজই মোবাইল লাইনে সম্পন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলেই অনেক দেশ আমাদের অভিজ্ঞতা জানতে আসছে। এ বাজেট বাস্তবায়ন করলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’
বিরোধীদলীয় নেতার প্রশংসা
সংসদ নেতা বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের প্রশংসা করে বলেন, ‘১৯৮৬ সাল থেকে এ সংসদে আছি। সরকারে ছিলাম, বিরোধী দলেও ছিলাম। একসময় পার্লামেন্ট ছিল খিস্তিখেউড়ের জায়গা। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রওশন এরশাদ নির্বাচনে এসেছেন। এখন এই অধিবেশনে বিরোধীদলীয় নেতা আমার সমালোচনা করছেন অনেকগুলোই গঠনমূলক সমালোচনা, যা দেশ ও জনগণের কাজে আসবে। এর আগের অধিবেশনকক্ষে চেয়ার ভাঙা হয়েছে, মাইকের তার ছেঁড়া হয়েছে, ফাইল ছোড়া হয়েছে, এখন আর সে অবস্থা নেই।’
তবে, ফরমালিন নিয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিরোধীদলীয় নেত্রী অনেক কথাই বলেছেন। কিন্তু উনি জানতে পারতেন না যদি সরকার এগুলো ধরার উদ্যোগ না নিত। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাত্ক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা করেছি।’