ওসির ওপর ওসি আছেন : রুস্তম আলী ফরাজী
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সংসদে ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে আজ রোববার স্বতন্ত্র সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, দেশে প্রতিটি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) ওপর আরেকজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন। তাঁরা দলীয় ক্ষমতা দেখান।
কয়েকজন সাংসদ মন্ত্রণালয়ের সেবা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানান। ওই একই আলোচনায় অংশ নিয়ে একজন সাংসদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ না বাড়িয়ে চাঁদাবাজি ও ঘুষের টাকা দিয়ে মন্ত্রণালয় পরিচালনার প্রস্তাব করেছেন। অপর এক সাংসদ বলেছেন, অনেক থানার ওসি দিনে আওয়ামী লীগ, রাতে বিএনপি হয়ে যান।
রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘প্রতিটি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) ওপর আরেকজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছে (ওসি)। তারা দলীয় ক্ষমতা দেখায়, দালালি করে, হয়রানি করে, সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। এতে সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। মানুষ কম খেয়ে শান্তিতে থাকতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও উদ্যোগে এই পরিস্থিতির অবসান হতে পারে এবং শান্তি ফিরে আসতে পারে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংসদ মো. নোমান বলেন, পুলিশ চাঁদাবাজি করে এটা সত্য। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা চাঁদা তোলে। এ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ না বাড়িয়ে ঘুষের টাকা দিয়েই মন্ত্রণালয়ের কাজকর্ম পরিচালনার প্রস্তাব করেন তিনি।
আরেক সদস্য নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, অনেক থানার ওসির স্ত্রীরা বলেন, তাঁদের স্বামীর বেতন লাগে না। দেশের এমন কোনো উপজেলা শহর এলাকা নেই, যেখানে মাদকের বিস্তার ঘটেনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এগুলো নিযন্ত্রণ করতে পারছে না। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার দাবি জানান।
হাজি মো. সেলিম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১১ হাজার ৩৬৯ টাকা দেওয়ার পরও সাধারণ মানুষের গাড়ি রিক্যুইজিশন হয় কেন। এই বরাদ্দের মধ্যে গাড়ি খাতে বরাদ্দ আছে কি না, তা তিনি জানতে চান। তিনি বলেন, সেবার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন দুই ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সেবা পাচ্ছে না। মেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সিলর না থাকায় সাধারণ মানুষ ঝামেলায় পড়লে ডিসি, এসি ও ওসিদের কাছে যায়। তারাই এখন সালিস বিচার করে। তারা যেন সুন্দরভাবে বিচার সালিস করে হাজি সেলিম সে দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে।
সাংসদ শওকত চৌধুরী বলেন, এমন অনেক ওসি আছেন, যাঁরা দিনে আওয়ামী লীগ ও রাতে বিএনপি সাজেন।
সাংসদদের এসব অভিযোগের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ওসিদের সম্পর্কে কোনো বক্তব্য দেননি। কিন্তু মাদক সম্পর্কে তিনি বলেন, মাদক সেবনকারীদের চেয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য যানবাহন ও লোকবল দরকার। পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ ও যানবাহন ক্রয়ে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজি কে এবং কোথায় করে, সেটা জানালে বদলিসহ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি চাঁদাবাজি সম্পর্কে জানলে পুলিশ মহাপরিদর্শককে জানানোর আহ্বান জানান।