বগুড়ায় সাংসদের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের সাংসদ ও বগুড়া জেলা জাসদের সভাপতি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করেছে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ।
সাংসদের বিরুদ্ধে টিআর-কাবিখা প্রকল্পের বরাদ্দ লুটপাট, স্বজনপ্রীতি, আত্মসাত্ এবং সরকারি খাসপুকুর জবর-দখলের অভিযোগ এনে আজ বুধবার দুপুরে নন্দীগ্রাম উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই জুতা মিছিল করেন।
এ ঘটনায় সাংসদ-সমর্থক জাসদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেছেন। পরে জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাংসদের সমর্থকেরা।
এ ঘটনায় বর্তমানে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় উপজেলা সদরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সাংসদ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পে লুটপাট, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি এবং সরকারি খাসপুকুর জবরদখলের অভিযোগ এনে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয় চত্বর থেকে জুতা মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
জুতা মিছিলের খবরে সাংসদের সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বেলা দেড়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিচে আওয়ামী লীগের নেতা জাহেদুল ইসলামকে একা পেয়ে তাঁরা তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। বেলা দুইটার দিকে জাসদ নেতা-কর্মীরা জাহিদুলের বিরুদ্ধে মিছিল বের করেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত জাসদ-সমর্থিত সাংসদ রেজাউল করিম দুর্নীতি, লুটপাটের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছেন। তিনি টিআর-কাবিখার মতো প্রকল্পে লুটপাটের রেকর্ড গড়েছেন। সরকারি খাসপুকুর প্রভাব খাটিয়ে জবরদখল করছেন। সাংসদের এসব লুটপাট-অনিয়মের প্রতিবাদ জানাতে আমরা মিছিল করি। কিন্তু উপজেলা জাসদের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুলের নেতৃত্বে সাংসদের লোকজন আমাকে একা পেয়ে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
এ ব্যাপারে কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, সাংসদের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করার পর দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা পাল্টা মিছিল বের করেন। তবে জাহিদুলকে লাঞ্ছিত করার সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান তিনি।
সাংসদ রেজাউল করিম মোবাইলে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁর নির্বাচনী এলাকায় টিআর-কাবিখা প্রকল্পে অনিয়মের ঘটনা ঘটেনি। তাঁর এলাকাতেই খুব স্বচ্ছভাবে এটি পরিচালিত হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, মূলত এখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কিছু অনৈতিক দাবি ছিল। তার পরও তিনি কিছুটা পূরণ করেছেন। এর পরও গুটিকয়েক নেতা ব্যক্তিগত স্বার্থে দলীয় নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী গুটি কয়েক নেতা উন্নয়ন বরাদ্দে ভাগ-বাঁটোয়ারা চেয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী বলেন, সাংসদের বিরুদ্ধে জুতা মিছিলের পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে উপজেলা সদরে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ মামলা দায়ের করেনি।