‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন -২০১৪’ পাস
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা জাতীয় সংসদে পাস হলো ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন-২০১৪’। বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে উপস্থিত সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে এ বিলটি পাস হয়। এর আগে বিলটি পাসের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটিতে কণ্ঠভোট চাইলে তা সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। এই আইনের বিধান অনুযায়ী এ ব্যাংকের মালিকানা থাকবে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের সুবিধাভোগী সমিতিগুলোর হাতে ৪৯ শতাংশ এবং সরকারের হাতে ৫১ শতাংশ। ব্যাংকের মূলধন হবে এক হাজার কোটি টাকা। বিলে বলা হয়েছে, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’প্রকল্পের আওতাধীন সমবায় সমিতিগুলো এ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার হবে এবং এর বাইরে অন্য কোনো সমবায় সমিতি এর শেয়ারহোল্ডার হতে চাইলে পরিচালনা পরিষদের অনুমতি লাগবে। এ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা হবে ১৫ জন। তাদের ৮জন সরকার মনোনীত এবং বাকি ৭জন সমিতিগুলোর প্রতিনিধি থাকবেন। সদস্যদের মধ্যে থেকেই একজনকে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেবে পর্ষদ। তবে এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। বিলে বলা হয়েছে, এই ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে এক হাজার কোটি টাকা। অনুমোদিত মূলধন প্রতিটি একশ’টাকার ১০ কোটি সাধারণ শেয়ারে সমভাবে বিভক্ত হবে। ব্যাংক সরকারের অনুমোদনক্রমে সময়ে সময়ে মূলধন বৃদ্ধি করতে পারবে। ব্যাংকের পরিশোধিত শেয়ার মূলধন হবে দুইশ’কোটি টাকা, যার ৫১ ভাগ সরকার এবং ৪৯ ভাগ সমিতি কর্তৃক পরিশোধ করা হবে। ঋণ গহীতা শেয়ার হোল্ডার তার শেয়ার সমশ্রেণীর অপর ঋণগ্রহীতার কাছে হস্তান্তর করতে পারবেন। পাস হওয়া এ আইনের বিধান অনুযায়ী, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নামে প্রথমে দেশের ৪৮৫ উপজেলায় শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করবে ব্যাংকটি। মূলত ভিন্নভাবে গ্রামীণ মানুষের সঞ্চয় সংগ্রহ ও তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণের জন্য গ্রামে গ্রামে শাখা খুলবে ব্যাংকটি। গ্রামীণ ব্যাংক যেমন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তেমনি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংককেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে। এ আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’প্রকল্প দেশের গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করা, তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ নারীর ক্ষমতায়ন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য গ্রাম সংগঠন সৃজন, তাদের প্রশিক্ষণ দান, তহবিলের যোগান এবং ঋণদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রেখে চলেছে। এই কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং তাদের সঞ্চয় ও অর্জিত অর্থ লেনদেন ও রক্ষণাবেক্ষণে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের আদলে একটি ব্যাংক গঠনের লক্ষ্যে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বিল-২০১৪’ সংসদে উত্থাপন করা হয়। এর আগে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিলের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।