আসামির চম্পট, ৫ পুলিশ বরখাস্ত
রিপোর্টার, এ বি সি নিউজ বিডি, ঢাকা, বাগেরহাটে আদালতের হাজতখানা থেকে কাঠগড়ায় নেওয়ার পথে আজ বুধবার গাজী দেলোয়ার হোসেন (২২) নামের এক আসামি পালিয়ে গেছেন। তাঁকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গাজী দেলোয়ার খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর গ্রামের আবদুল গফুর গাজীর ছেলে। তিনি ডাকাতি মামলার আসামি। গত ২৫ এপ্রিল ডাকাতির কথা স্বীকার করে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
বাগেরহাটের আদালত পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল আটটার দিকে সদর উপজেলার মহাদেবের মোড় এলাকায় দেলোয়ারসহ মোট ১২ জন আসামিকে আদালতে হাজির করতে জেলা কারাগার থেকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে আদালতের হাজতখানা থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নেওয়ার পথে গাজী দেলোয়ার কৌশলে হাতকড়া খুলে দৌড়ে পালিয়ে যান।
বাগেরহাট জেলা কারাগারের জেলার মো. বদরুদ্দোজা এই প্রতিবেদককে বলেন, ২৫ এপ্রিল থেকে দেলোয়ার কারাগারে আটক ছিলেন। মামলায় হাজিরা দিতে পুলিশ প্রহরায় আজ সকাল আটটার দিকে কারাগার থেকে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর কী হয়েছে, তা জেল কর্তৃপক্ষের জানা নেই।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল মোল্লা বলেন, দেলোয়ারকে ধরতে পুলিশের একাধিক দল অভিযান শুরু করেছে।
পাঁচ পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশের পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লা ওই পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
বরখাস্ত করা ওই পুলিশ সদস্যদের আদালত থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। আসামি পালানোর ঘটনায় বাগেরহাটের সহকারী পুলিশ (সদর দপ্তর) সাদিয়া আফরোজকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লা এই প্রতিবেদকের কাছে পুলিশ সদস্যদের বরখাস্ত করার কথা নিশ্চিত করেন। তবে তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা পুলিশ সদস্যদের নাম জানাতে পারেননি।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পাঁচ পুলিশ কনস্টেবল হলেন ফিরোজ আহমেদ, আবদুল আজিজ, আবদুল মজিদ, শুকরঞ্জন অধিকারী ও ফারহানা আক্তার। বাগেরহাট আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান মোল্লা পাঁচ পুলিশ কনস্টেবলের নাম নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, এঁরা সবাই বাগেরহাট আদালতে কর্মরত ছিলেন এবং দেলোয়ার গাজীসহ অন্য আসামিদের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করছিলেন। বাগেরহাটের পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আজম খান প্রথম আলোকে জানান, গত ২১ এপ্রিল দিবাগত রাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার মহাদেবের মোড় এলাকার একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাত দলটি ওই বাড়ি থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার মোবাইল সেটসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুলিশ ২৪ এপ্রিল খুলনা মহানগরের জোড়াগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার হোসেনসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া দেলোয়ার ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লুট হওয়া স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়।