বেড়েছে নজরদারি, পাল্টেছে ইয়াবার রুট

yabaরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সম্প্রতি নৌপথে ইয়াবার কয়েকটি বড় চালান ধরার পর তাদের এ ধারণা আরো জোরালো হয়েছে।

সর্বশেষ সোমবার বঙ্গোপসাগরের বর্হিনোঙরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে একটি মাছ ধরার ট্রলারে দেড় লাখ ইয়াবাসহ একজনকে আটক করে ঊপকূলরক্ষীরা।

এর আগে নগরীর ফিশারিঘাট এলাকায় ৩০ হাজার ইয়াবাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সন্দ্বীপ চ্যানেলে অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া কোস্টগার্ড কর্মকর্তা মাহফুজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার গভীর রাতে আটক হওয়া চালানটি আরো আগে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কোস্টগার্ডের নজরদারির কারণে তা এতোদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি।

বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় চোরাচালানিরা এ সময়টাকে ইয়াবা পাচারের জন্য বেছে নিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

মাহফুজুল বলেন, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় ৫০টির মত ইয়াবা তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানা থেকে তৈরি হওয়া ইয়াবা বাংলাদেশে আসছে।

চোরাকারবারীরা বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারের জন্য মাছ ধরার ট্রলার বেছে নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সমুদ্রে চলাচলকারী অন্যান্য নৌযানের চেয়ে ফিশিং ট্রলারগুলোর প্রতি নজর কিছুটা কম থাকে। আর এর সুযোগ নেয় চোরাকারবারীরা।”

কোস্টগার্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারিতে মাছ ধরার বিভিন্ন ট্রলার থেকে ৭২ হাজার এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৫ হাজার ইয়াবা আটক করা হয়।

 চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গোয়োন্দা) বাবুল আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সড়ক পথে বিভিন্ন স্থানে নজরদারি ও তল্লাশির কারণে চোরাচালানিরা এখন নৌপথকে ‘নিরাপদ’ মনে করে।

তিনি বলেন, পাচারকারীরা সমুদ্রে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাছ ধরার ট্রলারে করে ইয়াবা এনে বাংলাদেশের ঊপকূলবর্তী বিভিন্ন স্থানে তা ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করে। অনেক সময় ইয়াবার চালান নদীতেও হাতবদল হয়ে থাকে।

এছাড়া ট্রলারে তল্লাশির সময় সেগুলো পানিতে ফেলে দেয়া সহজ বলে নৌপথে পাচারকারীরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন বলে মনে করছেন বাবুল আক্তার।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ফিশারিঘাটে ইয়াবার চালানসহ গ্রেপ্তার হওয়া একজন ‘এফবি সাগর’ নামে একটি মাছ ধরার ট্রলারের খালাসি।

 

অন্যজন মো. আজম (৫০) ফিশারীঘাটের নৌযান মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজম মেকানিকসের মালিক।

কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন এলাকার কাছাকাছি স্থানে অন্য একটি ট্রলার তাদের ইয়াবাগুলো দেয় বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন তারা।

নগরীর ফিশারি ঘাট, ১৫ নম্বর ঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে সমুদ্র থেকে নিয়ে আসা ইয়াবার চালান জেলেরা হাতবদল করে থাকে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা আনোয়ার জানান।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমাও মনে করেন, সড়কপথে নজরদারির কারণে বর্তমানে নৌপথেই বেশি ইয়াবা পাচার হচ্ছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ