সংসদে জাসদ-জাতীয় পার্টিতে উত্তেজনা

সংসদরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ভারতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিএলএফ বাহিনীর তালিকা ভারত থেকে দেশে আনতে সংসদে একটি বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি আনেন।

এ সময় ফিরোজ রশীদের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সংসদে জাতীয় পার্টি ও জাসদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরে যেন প্রতিবিপ্লব না হয়, এ জন্য বিএলএফ গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বাহিনীর একজন সিরাজুল আলম খান বিএলএফ থেকে বের হয়ে জাসদ তৈরি করেন। আমরা যাঁরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগ করতাম, এই জাসদ আর গণবাহিনী তাদের মাঠে-ঘাটে হত্যা করেছে। সেদিন যদি জাসদ বা গণবাহিনী সৃষ্টি না হতো, তাহলে বঙ্গবন্ধুকে কেউ হত্যার সাহস পেত না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী  তো নীলকণ্ঠ, উনি সব সহ্য করতে পারেন।’

সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেন, ‘সিরাজুল আলম খান মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে প্রতিবিপ্লবের পথ সুগম করেছিলেন। সে সময়ে জাসদের পেছনে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মুসলীম লীগ পরিবার রাতারাতি জাসদ হয়ে গেল। আজকে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের ভুলের জন্য জাতিকে ৪৩ বছর ধরে খেসারত দিতে হচ্ছে।’

মন্ত্রী এ সময় প্রস্তাবটি গ্রহণের পক্ষে মত দিলে তা কণ্ঠভোটে গৃহীত হয়।

এরপর জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল পয়েন্ট অব অর্ডারে অনির্ধারিত আলোচনায় বলেন, ‘বিরোধী দলের একজন সদস্যের প্রস্তাব নিয়ে সরকারের শরিক একটি দলকে আনন্দচিত্তে জবাই করা হচ্ছে। দলটির ঠিকুজি উদ্ধার করা হচ্ছে।’

মঈন উদ্দীন খান বলেন, ‘ইতিহাসের মাইন ফিল্ডে হাঁটলে যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। ’৭২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত জাসদ যা করেছে, ইতিহাস বলবে আমরা সঠিক না ভুল ছিলাম। আমাদেরও ২০ হাজার লোক মারা গিয়েছিল। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, জাসদ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছিল।’

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদসহ আরও কয়েকজন সদস্য বাদলের উদ্দেশে বলেন, গণবাহিনী নিয়ে কথা বলেন।

মঈন উদ্দীন খান বলেন, ’৭২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত জাসদ যা করেছিল, সেটা ছিল ইতিহাসের বাঁক। সময় বলে দেবে কে সঠিক আর কে ভুল ছিল। কখনো বলিনি যা করেছি, সঠিক করেছি। কিন্তু যেভাবে প্রস্তাবটি তোলা হয়েছে, সেটা সঠিক হয়নি। ’৮২ থেকে ’৯০ পর্যন্ত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এখানে অনেকেই আন্দোলন করেছিল।’

এ সময় ফিরোজ রশীদ চেয়ার ছেড়ে মঈন উদ্দীনের উদ্দেশে কথা বলতে শুরু করলে মঈন উদ্দীন স্পিকার শিরীন শারমিনের উদ্দেশে বলেন, ‘আই নিড ইউর প্রটেকশন।’ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ফিরোজ রশীদকে আসনে বসার অনুরোধ করেন।

মঈন উদ্দীন বলেন, হাসানুল হক ইনু ও আমি টেলিভিশনে বলেছি, ‘পিতার (বঙ্গবন্ধু) বিরুদ্ধে সমালোচনা করা ভুল হলে আজ তার কাফফরা দিচ্ছি।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ