রাজীবের খুনিদের ছাড়বে না মোদি সরকারও
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আত্মঘাতী হামলায় নিহত ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর খুনিদের ক্ষমা করবে না নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারও। দলীয় আদর্শ, নীতি-নৈতিকতায় ভারতের বৃহত্ এই দুই দলের মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য থাকলেও, অপরাধীদের ক্ষমা করার প্রশ্নে কংগ্রেস সরকারের নীতিই অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান সরকার। গত মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা রাজীবের খুনিদের মুক্তি দেওয়ার যে আবেদন জানিয়েছেন, তাতে বিরোধিতা করেছে এনডিএ জোট সরকার।
আজ রোববার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯১ সালের মে মাসে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে রাজীব গান্ধীকে হত্যা করা হয়। হত্যায় জড়িত আসামিরা সবাই শ্রীলঙ্কাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন টাইগার অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) সদস্য। ১৯৮৭ সালে শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ওপর ক্ষুব্ধ হয় তামিল গেরিলারা।
রাজীব গান্ধীকে হত্যার দায়ে মুরুগান, সান্থান ও পেরারিভালানকে ২০০১ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পরের দিন তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভা ওই তিনজনসহ মামলায় দোষী সাব্যস্ত সাত আসামিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ ঘোষণার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে তখন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে কেন্দ্রীয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাত আসামিকে তামিলনাড়ু সরকারের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি স্থগিত ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে এ ঘটনায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন বহাল রাখতে রাজ্য সরকারকে আদেশ দেওয়া হয়।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘একজন প্রধানমন্ত্রীর খুনি যদি মুক্তি পেতে পারে, তাহলে সাধারণ জনগণ কী বিচার আশা করবে?’
পরে আদালত কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদনটি পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠান এবং তিন মাসের মধ্যে বিষয়টি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আনার নির্দেশ দেন। গত মঙ্গলবার সাংবিধানিক ওই বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারের ওই আবেদন গ্রহণ করেন।
সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির তিক্ত নির্বাচনী লড়াই হয়েছে। এ ছাড়া এআইএডিএমকের প্রধান ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। তবে রাজীবের খুনিদের মুক্তি না দেওয়ার প্রশ্নে শক্ত অবস্থান নিয়েছে মোদি সরকার।
মোদি সরকারের আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও বলেছেন, ‘রাজীব গান্ধীর খুনিদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া বিজেপি সরকারের উদ্বেগের কারণ। কেননা এটি করা হলে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিষয়টিকে সামগ্রিকভাবে অবহেলা করা হবে।’