তালপট্টি কোথায় আছে খুঁজে বের করুক
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমুদ্রে তালপট্টি দ্বীপের কোনো অস্তিত্ব নেই। এ নিয়ে কথা বলে সরকারের অর্জনকে খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির এক নেতা বলেছেন, আমরা তালপট্টি পাইনি। তাঁকে উচিত বঙ্গোপসাগরে পাঠিয়ে দেওয়া। তালপট্টি কোথায় আছে খুঁজে বের করুক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যদি জয়ী না হতাম, তাহলে ভারতের কাছ থেকে সমুদ্রসীমা আনতে পারতাম কি না, সন্দেহ। কারণ, অতীতে কোনো সরকার এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’ ভারত ও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সমুদ্র বিজয়কে সরকারের বিরাট সাফল্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই বিজয়ের ফলে অর্জিত সম্পদ যথাযথ কাজে লাগানো হবে।’
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের সালিসি ট্রাইব্যুনাল ৭ জুলাই বঙ্গোপসাগরে ২০০ নটিক্যাল মাইলের একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২০০ নটিক্যাল মাইলের বাইরে মহীসোপান অঞ্চলে বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ ও সার্বভৌম অধিকার সুনিশ্চিত করে বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্রসীমা নির্ধারণী মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ের ফলে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের বিতর্কিত জলসীমানায় ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯ হাজার ৬৬৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা পেয়েছে।
নারীকেও সমান অবদান রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে সচিবালয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে দ্রুত এগিয়ে নিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও সমান অবদান রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘নারীরা জাতীয় উত্পাদনে সমানভাবে এগিয়ে এলে আমরা সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত হতে পারব।’ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নারীদের আরও উদ্যমী হতে হবে। নিজস্ব সামর্থ্যের ওপর আস্থা-বিশ্বাস রাখতে হবে। যোগ্যতা দিয়েই সমাজে জায়গা করে নিতে হবে। সরকার থেকে আমরা সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাব।’
পুরুষকে হিপোক্রেসি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান
নারী উন্নয়নে পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন—মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাইরে নারীমুক্তির কথা বলবেন আর ঘরে গিয়ে নারী নির্যাতন করবেন, এ হিপোক্রেসি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংসদ নেতা, স্পিকার, সংসদ উপনেতা ও বিরোধীদলীয় নেতা চারজনই নারী। বিশ্বে এর দ্বিতীয় নজির নেই। ২০ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্যসহ ৭০ জন নারী সাংসদ আছেন। ২০ শতাংশ নারী সংসদ সদস্য বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আইন করে স্থানীয় সরকারগুলোতে নারীর জন্য আসন সংরক্ষণ করেছি। পুরুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেও অনেক নারী নির্বাচিত হচ্ছেন। ফলে গ্রাম পর্যন্ত নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হয়েছে।’ ২০১৩ সালে প্রকাশিত গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বে সপ্তম বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।