যেখানে রোজা রাখা মানা

China Muslimআন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ চীনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াং। এখানকার একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নাম উইঘুর। এই গোষ্ঠীর প্রায় সবাই মুসলমান।
মুসলমানদের ধর্মীয় অনুশাসনের পাঁচটি মূল ভিত্তির একটি হল রোজা। অথচ রমজান মাসে রোজা রাখা উইঘুর সম্প্রদায়ের জন্য নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা সেখানে আগে অঘোষিত ছিল। এবার তা সরাসরি সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এই বিষয় নিয়ে সাংবাদিক মার্টিন পেশেন্সের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। সেখানে উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলমানদের ওপর সরকারের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিপীড়নের চিত্র ফুটে উঠেছে।
প্রতিবেদক জিনজিয়ানের বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের কেউই সরকারের ভয়ে নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।
অন্তত তিনজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেছেন, তাঁরা যে রোজা রাখছেন না তা প্রমান করার জন্য তাঁদের শিক্ষকদের সঙ্গে প্রতিদিন খাবার খেতে হয়। যাঁরা তাঁদের সঙ্গে খেতে অস্বীকৃতি জানাবে তাঁদের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আপনি যদি এখানে স্বাভাবিক জীবন চান তাহলে রোজা না রাখাই আপনার জন্য মঙ্গলজনক হবে।’ শিক্ষার্থীরা বলেছেন, জিনজিয়াংয়ের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়েই রোজাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সরকারি দপ্তরেও এই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুসলমান কর্মচারিদের কাছ থেকে রোজা না রাখার লিখিত মুচলেকাও নিয়েছে।

 কাশগার নরমাল ইউনিভারসিটির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেউ রোজা রাখলে কর্তৃপক্ষ তাঁকে সনদ দেবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে। নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থীরা রোজা রাখতে পারছে না। এর ফলে সরকার সম্পর্কে তীব্র ক্ষোভ দানা বাঁধছে।

অন্যদিকে সরকারি গণমাধ্যম রোজা নিষিদ্ধকরণকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে ‘রোজা রাখার কুফল’ বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার করছে। রোজা রাখলে কী কী স্বাস্থ্যঝুকিতে পড়তে হবে তা নিয়ে চিকিত্সকেরা আলোচনা করছেন।

উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করছে, সরকার এভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার ফলে তাঁদের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করছে এবং তাঁরা প্রবলভাবে সরকারবিদ্বেষী হয়ে পড়ছেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ