সিসি ক্যামেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাজধানীর সন্ত্রাসীরা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজধানীর বেশিরভাগ বিপণী বিতান, হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বসানো সিসি ক্যামেরা (ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা) নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা। পাশাপাশি সতর্ক হয়েছে উঠতি সন্ত্রাসীরা। বর্তমান সময়ের বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা শনাক্ত হয়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে। হামলাকারীদের শনাক্তে পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তাদের শেষ ভরসাই ছিল সিসি ক্যামেরা। এ কারণেই সিসি ক্যামেরাই এখন যত ভয় সন্ত্রাসীদের। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের শেষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দাবি করেন, রাজধানীর ৮০ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর আগে রাজধনীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার কথা জানিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ। গুলশানের চাঞ্চল্যকর মিল্কি হত্যার পর সর্বশেষ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীমের উপর হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে একটি বিপণী বিতান ও হাসপাতালের সামনের সড়কে বসানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে। গত বছরের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণী বিতানের সামনে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কিকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রসীরা। র্যাব এই মামলার তদন্তে নেমে ঐ রাতেই শপার্স ওয়ার্ল্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। ফুটেজ দেখেই মূল হামলাকারীদের শনাক্ত করার পর অভিযান শুরু করে র্যাব। ভোরেই উত্তরার একটি ক্লিনিক র্যাব- ১’এর একটি দল মূল ঘাতকসহ হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আটক করে। গত ১৯ জুন সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে বেড়িয়ে ৯/এ’র সড়কের মোর ঘোরার সময় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীমকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তিন সন্ত্রাসী। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। ঘটনার তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলের পাশের ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিকের সিসি ক্যামেরার সহায়তা নেয় র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয় ৬ সন্ত্রাসীকে। এর মধ্যে র্যাব ৩ জনকে গ্রেফতার করার পর গোয়েন্দা পুলিশও ৩ জনকে গ্রেফতার করে। এসব কারনে সিসি ক্যামেরাই এখন যত ভয় রাজধানীর ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীদের। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বেশিরভাগ বিপণী বিতান ও হাসপাতালের ভেতরে বাহিরে বসানো সিসি ক্যামেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে সন্ত্রাসীরা। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক শামীমের উপর হামলার অভিযোগে গত সপ্তাহে র্যাবের হাতে আটক এক সন্ত্রসী গণ-মাধ্যমে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, ইবনে সিনার সিসি ক্যামেরার বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। জানা থাকলে তারা অন্য কোথাও হামলার পরিকল্পনা করতো। সিসি ক্যামেরার বিষয়টি তাদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। হামলাও সন্ত্রসী কর্মকাণ্ডের নতুন পথও খুঁজছে তারা বলে জানায় এই প্রতিবেদককে। অপরদিকে রাজধানীতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কারণে সতর্ক হয়েছে উঠতি সন্ত্রাসীরা। তারা বিপণী বিতান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার আশপাশে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে না বলে জানিয়েছে এই প্রতিবেদককে। কাঁঠালবাগানের এক উঠতি সন্ত্রাসী কলাবাগান থানায় তার এক সহযোগিকে ছাড়াতে এসে গত শুক্রবার আটক হয় এই থানায়। জসিম নামের এই উঠতি সন্ত্রাসী পড়াশুনা না করেও ছাত্রলীগ কলাবাগান থানার সদস্য ছিল। এই কমিটি এখন আর নেই। সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয়ে চলে তার কর্মকাণ্ড। জসিম জানায়, তারা বসুন্ধরা ও ইস্টার্ন প্লাজার আশপাশে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে না। যায় না এলিফ্যান্ট রোডেও। সিসি ক্যামেরাই তাদের যত ভয়। গ্রীণ রোড এলাকায়ই তাদের কর্মকাণ্ড।