দুবাইয়ে যৌনদাসত্বের শিকার পাকিস্তানি নারীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ একসময় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল ১৬ বছর বয়সী পাকিস্তানি কিশোরী জুনেরার। তার সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। অর্থের অভাবে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে সে। দুবাইয়ে পাচার করে যৌনকর্মী হিসেবে তাকে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। সেই থেকে তার জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার।
আজ সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রতিবছর পাকিস্তান থেকে কয়েক শ নারী দুবাইয়ে পাচার হন। সেখানে তাঁরা যৌনদাস হিসেব কাজ করতে বাধ্য হন। ছদ্মনামের জুনেরা ও তার বোন শায়েস্তাও একই পরিণতির শিকার।
জুনেরার পরিবারের বাস পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে। পরিবারটির অর্থসংকটের সুযোগ নেন আয়েশা নামের এক প্রতিবেশী নারী।
দুই বোনকে গৃহস্থালি কাজের প্রস্তাব দিয়ে একপর্যায়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তাদের দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। বিউটি পারলারে কাজ দেবে বলে নিয়ে যান আয়েশা। সেখানে যাওয়ার পরে আসল বিপদের মুখে পড়ে দুই বোন। যৌনকর্মী হিসেবে তাদের কাজ করতে বলা হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে বা অস্বীকৃতি জানালে তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন ও নানা হুমকি। অবশেষ তারা এ কাজ করতে বাধ্য হয়।
২০১৩ সালে দুই বোন পাচারকারীদের খপ্পর থেকে পালাতে সক্ষম হয়। পুরো ঘটনাটি পরিবারকে জানায়। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পরে পাচারকারীরা তাদের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। এতে জুনেরা আহত হয়। পাচারের অভিযোগে আয়েশা ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে জুনেরার পরিবার মামলা করেছে। অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। কিন্তু মামলা আর এগোয় না। বরং মামলা করে ভুক্তভোগীরাই আছে বিপদে।
জুনেরা ও শায়েস্তা পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাদের দুর্দশা কাটেনি। পাচারকারীদের ভয়ে তাদের লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে। যৌনদাসত্ব থেকে আক্ষরিক অর্থে দুই বোনের মুক্তি মিললেও দুষ্টচক্র তাদের পিছু ছাড়ছে না।
পাচারকারীরা শক্তিশালী। তাই আইন তাদের টিকিটিও ছুঁতে পারছে না। বরং জুনেরা ও শায়েস্তাদের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত হয়।