ভারতের ট্রানজিট হিসেবে বাংলাদেশ

trnsitআন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা : বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে নিজেদের পণ্য আনা-নেওয়া তথা ট্রানজিট সুবিধা পাওয়া ভোগ করা শুরু করেছে ভারত। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ট্রানজিট সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশটির প্রথম খাদ্যশস্যের চালান ত্রিপুরায় পৌঁছতে যাচ্ছে বলে কর্মকর্তারা বোরবার জানিয়েছেন।

৩ হাজার টন খাদ্যশস্য নিয়ে ট্রানজিট রুট ব্যবহারের প্রথম চালানের একটি জাহাজ পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দর থেকে ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে এসেছে। বৃহস্পতিবার হলদিয়া ছেড়ে আসা জাহাজটি প্রথমে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ নৌবন্দরে নৌঙ্গর করবে।

আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সড়ক পথে এগুলো ত্রিপুরা যাবে বলে ত্রিপুরার খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ট্রানজিটের প্রথম চালানটি ত্রিপুরা পৌঁছতে ১০ থেকে ১৫ দিন লাগবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

একই রুট ব্যবহার করে পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য ত্রিপুরায় যাবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌবন্দর ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।

ত্রিপুরার ফুড অ্যান্ড সিভিল সাপ্লাই মন্ত্রী বানুলাল সাহা বার্তাসংস্থা আইএএনএসকে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিকভাবে রুটটি ব্যবহার করে ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, রেল ওয়াগনের অভাব, বিভিন্ন সুবিধার অপর্যাপ্ততা ও পরিবহন সমস্যার কারণে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সবসময় খাদ্যশস্যের অভাব লেগে থাকে। বিশেষ করে বর্ষাকালে এ সমস্যা প্রকট হয়।

ফলে ঢাকার কাছ থেকে গ্রিন সিগনাল পাওয়ায় ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই) খাদ্যশস্যসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো আশুগঞ্জ নৌবন্দর ও বাংলাদেশের সড়ক পথ ব্যবহার করে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

এর আগে এফসিআই ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য বাংলাদেশের নৌবন্দর ও সড়ক পথ ব্যবহার করে ত্রিপুরায় পাঠানোর জন্য বাংলাদেশী পরিবহনকারীদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করে। ত্রিপুরার পর বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অন্য রাজ্যগুলো যেমন মিজোরাম, মনিপুর ও আসামে পণ্য পাঠানো হবে।

সময় ও ব্যয় কমানোর জন্যই বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ভারত ব্যবহার করছে বলে এফসিআইর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এর আগে বাংলাদেশ ভারতের রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস কোম্পানিকে আশুগঞ্জ হয়ে সড়ক পথে পাটনা মেগাবিদ্যুৎ প্রকল্পের সরঞ্জামাদি পরিবহনের সুযোগ দেয়। বৃহদাকার কার্গো ব্যবহার করে ওই সময় ভারি সরঞ্জামাদি পরিবহন করে নেয় ভারত। এতে বাংলাদেশের সড়ক পথ ও ব্রিজের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

ভারতের আভ্যন্তরীণ নৌপথ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বিশ্বপতি ত্রিবেদী কলকাতায় এক সেমিনারে শনিবার বলেছেন, সব ঠিকঠাক মতো চললে ভারত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বছরে ৩০ হাজার টন খাদ্যশস্য পরিবহন করতে চায়।

এতে করে ভারতের খাদ্যদ্রব্য পরিবহনের ব্যয় ও সময় অনেক বাঁচবে। অনেক কম ব্যয় ও কম সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে খাদ্যশস্য পৌঁছানো সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ